ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজায় ত্রাণের মাধ্যমে জীবাণু যুদ্ধ চালাচ্ছে ইসরায়েল চীনের সি৯৪৯ জেটলাইনার কি সুপারসনিক বিমান ভ্রমণের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনবে? ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষে ‘মন ও মানসিকতার যুদ্ধেও জয়ী’ হওয়ার দাবি ইরানের বিকেলে চাঁদাবাজি নিয়ে লাইভ, রাতে প্রকাশ্যেই সাংবাদিককে গলা কেটে হত্যা জিকে শামীম অর্থ পাচার মামলায় খালাস, বা ১০ বছরের সাজা বাতিল চীনের নতুন যুদ্ধবিমান: ইন্দো-প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের বিরুদ্ধে এক জবাব আহত ফিলিস্তিনিদের জন্য দ্বীপে চিকিৎসাকেন্দ্র প্রস্তুত করছে ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও তার্কিশ এয়ারলাইন্সের মধ্যে ভ্রমণ সুবিধায় সমঝোতা স্মারক সাক্ষর ঝিনাইগাতীতে বাস পুকুরে উল্টে তিন মাসের শিশুর মৃত্যু, আহত অন্তত ২০ চালু হবে জাতীয় পুরস্কার,মাইলস্টোন শিক্ষক মেহরিন চৌধুরীর নামে

চীন সীমান্তে ভারতের বৃহত্তম বাঁধ প্রকল্প নিয়ে উত্তেজনা, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫৩:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • / 18

ছবি সংগৃহীত

 

চীন সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশে ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ‘সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট’ ঘিরে দানা বেঁধেছে নতুন বিতর্ক। প্রকল্প এলাকায় হঠাৎ করে ড্রিলিং যন্ত্রপাতি এবং আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিক্কেই এশিয়া।

স্থানীয় বাসিন্দা কেন্টু জানান, “রাতের আঁধারে সেনা ও ভারী যন্ত্রপাতি এনে বসানো হয়েছে। আমাদের কোনো কিছু না জানিয়ে, আমাদের কৃষিজমির পাশেই এসব চলছে। এখন শুধু অস্ত্রধারী বাহিনী আর মেশিনের শব্দ শুনি।”

ভারত সরকারের দাবি, এই প্রকল্প পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়ক হবে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কৌশলগত শক্তি প্রদর্শনের একটি বড় উদ্যোগ। তবে স্থানীয়দের মতে, এটি তাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, সিয়াং নদী (যেটি ব্রহ্মপুত্র নামেও পরিচিত) স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছে শুধু একটি নদী নয়, এটি ‘মাদার সিয়াং’ জীবনের উৎস। এই নদীর তীরে ধান, কমলা, বাঁশ চাষের পাশাপাশি নদীকে তারা পবিত্র বলে মনে করেন। স্থানীয় বাসিন্দা দিবুত সিরাম বলেন, “এই প্রকল্পের কারণে অন্তত ৪২টি গ্রাম সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি প্রকৃত অর্থে জনমত নেওয়া হতো, তবে ৯৫ শতাংশ মানুষ এর বিরুদ্ধে রায় দিত।”

তবে ভারত সরকার বলছে, ৭০ শতাংশ মানুষ প্রকল্পের পক্ষে রয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, এই দাবি ভিত্তিহীন ও প্রতারণামূলক। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্পটি কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নয়, বরং চীনের সঙ্গে চলমান সীমান্ত বিরোধে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার কৌশলের অংশ।

প্রসঙ্গত, চীন ইতোমধ্যে তিব্বতের মেডোগ এলাকায় বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে। তার পাল্টা জবাবে ভারতও সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বৃহৎ বাঁধ নির্মাণে ঝুঁকছে।

তবে বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, চীনের প্রকল্পে প্রাকৃতিক ঢাল কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও ভারতের প্রকল্পটি পরিবেশগত ও কারিগরি দিক থেকে অযৌক্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, প্রকল্পটি শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নয়, তাদের প্রাচীন সংস্কৃতি ও জীবনধারাকেও চিরতরে বদলে দেবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

চীন সীমান্তে ভারতের বৃহত্তম বাঁধ প্রকল্প নিয়ে উত্তেজনা, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

আপডেট সময় ১০:৫৩:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

 

চীন সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশে ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ‘সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট’ ঘিরে দানা বেঁধেছে নতুন বিতর্ক। প্রকল্প এলাকায় হঠাৎ করে ড্রিলিং যন্ত্রপাতি এবং আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিক্কেই এশিয়া।

স্থানীয় বাসিন্দা কেন্টু জানান, “রাতের আঁধারে সেনা ও ভারী যন্ত্রপাতি এনে বসানো হয়েছে। আমাদের কোনো কিছু না জানিয়ে, আমাদের কৃষিজমির পাশেই এসব চলছে। এখন শুধু অস্ত্রধারী বাহিনী আর মেশিনের শব্দ শুনি।”

ভারত সরকারের দাবি, এই প্রকল্প পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়ক হবে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কৌশলগত শক্তি প্রদর্শনের একটি বড় উদ্যোগ। তবে স্থানীয়দের মতে, এটি তাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, সিয়াং নদী (যেটি ব্রহ্মপুত্র নামেও পরিচিত) স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছে শুধু একটি নদী নয়, এটি ‘মাদার সিয়াং’ জীবনের উৎস। এই নদীর তীরে ধান, কমলা, বাঁশ চাষের পাশাপাশি নদীকে তারা পবিত্র বলে মনে করেন। স্থানীয় বাসিন্দা দিবুত সিরাম বলেন, “এই প্রকল্পের কারণে অন্তত ৪২টি গ্রাম সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি প্রকৃত অর্থে জনমত নেওয়া হতো, তবে ৯৫ শতাংশ মানুষ এর বিরুদ্ধে রায় দিত।”

তবে ভারত সরকার বলছে, ৭০ শতাংশ মানুষ প্রকল্পের পক্ষে রয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, এই দাবি ভিত্তিহীন ও প্রতারণামূলক। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্পটি কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নয়, বরং চীনের সঙ্গে চলমান সীমান্ত বিরোধে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার কৌশলের অংশ।

প্রসঙ্গত, চীন ইতোমধ্যে তিব্বতের মেডোগ এলাকায় বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে। তার পাল্টা জবাবে ভারতও সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বৃহৎ বাঁধ নির্মাণে ঝুঁকছে।

তবে বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, চীনের প্রকল্পে প্রাকৃতিক ঢাল কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও ভারতের প্রকল্পটি পরিবেশগত ও কারিগরি দিক থেকে অযৌক্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, প্রকল্পটি শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নয়, তাদের প্রাচীন সংস্কৃতি ও জীবনধারাকেও চিরতরে বদলে দেবে।