ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
যুক্তরাজ্যের রুয়ান্ডা মডেল কপি করছে ইইউ — সমালোচনা থেকে সমর্থনে তিন বছরের পথচলা মার্কিন শুল্ক নীতিতে BRICS জোটে নতুন ঐক্যের ঢেউ। চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে প্রায় ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ পাচারকারী আটক গাজা সিটির দিকে ইসরায়েলের পূর্ণ দখল অভিযান, ৮ লাখ মানুষের জীবন হুমকিতে। “ফ্রান্সে দাবানলের তাণ্ডব: পুড়ে গেছে ৪২ হাজার একর এলাকা” হুথিদের নতুন নৌ ক্রুজ মিসাইল ‘সাইয়াদ’, লোহিত সাগরে নতুন গেম চেঞ্জার গাজায় ত্রাণের মাধ্যমে জীবাণু যুদ্ধ চালাচ্ছে ইসরায়েল চীনের সি৯৪৯ জেটলাইনার কি সুপারসনিক বিমান ভ্রমণের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনবে? ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষে ‘মন ও মানসিকতার যুদ্ধেও জয়ী’ হওয়ার দাবি ইরানের বিকেলে চাঁদাবাজি নিয়ে লাইভ, রাতে প্রকাশ্যেই সাংবাদিককে গলা কেটে হত্যা

পারমাণবিক চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতীয় স্বার্থবিরোধী: খামেনি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:১৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
  • / 44

ছবি সংগৃহীত

 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাবকে ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন। বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, “মার্কিন প্রস্তাব ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”

এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে তীব্র মতপার্থক্য চলছে। খামেনি বলেন, “স্বাধীনতার অর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্র বা তাদের মতো দেশগুলোর সম্মতির অপেক্ষা না করা।”

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।

সম্প্রতি ইরান জানিয়েছে, ওমানের মধ্যস্থতায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের কিছু উপাদান পেয়েছে। তবে তার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। খামেনি সাফ জানিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির “মূল চাবিকাঠি”, এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই।

তিনি বলেন, “যদি আমাদের ১০০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও থাকে, কিন্তু নিজস্ব সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা না থাকে, তবে সেগুলো অচল হয়ে যাবে। কারণ, জ্বালানি না থাকলে এগুলো চালানো সম্ভব নয়, এবং সেই জ্বালানির জন্য আবার আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের দরজায় কড়া নাড়তে হবে।”

এদিকে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসির সঙ্গে কায়রোতে বৈঠক করেছেন ইরানের প্রধান আলোচক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। সংস্থাটির সর্বশেষ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত ৩.৬৭ শতাংশ সীমার বহু গুণ বেশি।

আইএইএর আরেকটি পৃথক প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, ইরান অতীতে অঘোষিত স্থানে পাওয়া পারমাণবিক উপাদানের ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তেহরান এসব অভিযোগকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং ‘ইসরায়েলের সরবরাহকৃত জাল দলিলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি’ বলে অভিহিত করেছে।

বর্তমানে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি চুক্তি লঙ্ঘনের জবাবে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে সেই সুযোগ অক্টোবরের পর আর থাকবে না।

অন্যদিকে, ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

পারমাণবিক চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতীয় স্বার্থবিরোধী: খামেনি

আপডেট সময় ০৪:১৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাবকে ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন। বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, “মার্কিন প্রস্তাব ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”

এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে তীব্র মতপার্থক্য চলছে। খামেনি বলেন, “স্বাধীনতার অর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্র বা তাদের মতো দেশগুলোর সম্মতির অপেক্ষা না করা।”

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।

সম্প্রতি ইরান জানিয়েছে, ওমানের মধ্যস্থতায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের কিছু উপাদান পেয়েছে। তবে তার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। খামেনি সাফ জানিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির “মূল চাবিকাঠি”, এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই।

তিনি বলেন, “যদি আমাদের ১০০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও থাকে, কিন্তু নিজস্ব সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা না থাকে, তবে সেগুলো অচল হয়ে যাবে। কারণ, জ্বালানি না থাকলে এগুলো চালানো সম্ভব নয়, এবং সেই জ্বালানির জন্য আবার আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের দরজায় কড়া নাড়তে হবে।”

এদিকে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসির সঙ্গে কায়রোতে বৈঠক করেছেন ইরানের প্রধান আলোচক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। সংস্থাটির সর্বশেষ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত ৩.৬৭ শতাংশ সীমার বহু গুণ বেশি।

আইএইএর আরেকটি পৃথক প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, ইরান অতীতে অঘোষিত স্থানে পাওয়া পারমাণবিক উপাদানের ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তেহরান এসব অভিযোগকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং ‘ইসরায়েলের সরবরাহকৃত জাল দলিলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি’ বলে অভিহিত করেছে।

বর্তমানে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি চুক্তি লঙ্ঘনের জবাবে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে সেই সুযোগ অক্টোবরের পর আর থাকবে না।

অন্যদিকে, ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য নেই।