গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা, মুসলিম দেশগুলোকে পদক্ষেপের আহ্বান খামেনির

- আপডেট সময় ১১:৫৭:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 7
গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে মুসলিম দেশগুলোকে একসাথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
শনিবার (১০ মে) তেহরানে দেয়া এক ভাষণে তিনি ইসরাইলের অব্যাহত হামলা এবং পশ্চিমা বিশ্বের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। খামেনি বলেন, মাসের পর মাস ধরে চলা অবরোধ ও সামরিক অভিযানে গাজার জনজীবন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খাদ্য ও ওষুধের চরম সংকটে রয়েছে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ।
তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রত্যক্ষ সমর্থনে ইসরাইল এই সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে। মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়েছে। গাজার নাগরিকরা প্রতিদিন বেঁচে থাকার সংগ্রামে হেরে যাচ্ছেন।
এ অবস্থায় মুসলিম দেশগুলোর প্রতি নতুন করে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে খামেনি বলেন, “মানবিকতার দিক থেকে এখনই সময় গাজার পাশে দাঁড়ানোর।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি নতুন ত্রাণ ব্যবস্থাপনা প্রস্তাবনা এসেছে, যা বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হবে। তবে হামাস এই উদ্যোগকে ‘ইসরাইলি কৌশলে ত্রাণের সামরিকীকরণ’ বলে অভিহিত করেছে। সংগঠনটির দাবি, এটি একটি চক্রান্ত, যা বাস্তব সংকট নিরসনের পরিবর্তে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করবে।
গাজার বর্তমান চিত্র ভয়াবহ। অবরোধে কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে খাদ্য সরবরাহ। বিশুদ্ধ পানির অভাব, চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের ঘাটতিতে মৃত্যুর মুখে অসংখ্য রোগী। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হেপাটাইটিস ও ইমিউন রোগে আক্রান্ত অনেকেই চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছেন। এক ফিলিস্তিনি পিতা বিবিসিকে জানান, তার ডায়াবেটিস আক্রান্ত সন্তানের জন্য গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরেও ইনসুলিন পাচ্ছেন না।
শনিবার দেইর আল বালাহ, গাজা সিটি, রাফাহ এবং শেখ রাদওয়ান এলাকায় চালানো ইসরাইলি বিমান ও ড্রোন হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোর ওপর লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিশ্ব বিবেক ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি গাজার জনগণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।