শুল্কযুদ্ধে নতুন মোড়, চীন-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার বিভ্রান্তি

- আপডেট সময় ০৩:০১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
- / 40
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চীনের প্রতি সুর নরম করেছিলেন। তিনি জানান, চীনের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে এবং শুল্কসংক্রান্ত অচলাবস্থা নিরসনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর এই অবস্থানের পর বিশ্ববাজারে শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। তবে এখন চীন এ প্রসঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই দাবিকে অস্বীকার করেছেন। এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সময় আসেনি। খবর রয়টার্স ও সিএনবিসি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেন, “চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কসংক্রান্ত বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। এই শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদি এই যুদ্ধ অনিবার্য হয়, তবে চীন লড়াই করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা চাইলে চীনের দরজা খোলা রয়েছে। তবে সেই আলোচনা হতে হবে সমতা, সম্মান এবং পারস্পরিক মুনাফার ভিত্তিতে।” চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, দুই দেশের আলোচনার খবরের কোনো ভিত্তি নেই।
এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, “চীনের বক্তব্য সঠিক নয়। বৃহস্পতিবার সকালেও দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। কারা আলোচনায় অংশ নিয়েছে, সেটা মুখ্য নয়। তবে তাঁদের পরিচয় পরে প্রকাশ করা হবে।” ট্রাম্প দাবি করেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে।
এদিকে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হে ইয়াডং সিএনবিসিকে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে যে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যদি যুক্তরাষ্ট্র প্রকৃতপক্ষে আলোচনা চায়, তবে চীনের ওপর যেসব একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাতিল করতে হবে।”
অন্যদিকে, গতকালই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, ভারতের সঙ্গে একটি প্রাথমিক বাণিজ্যচুক্তি শিগগিরই চূড়ান্ত হতে পারে। তাঁর মতে, ভারতের শুল্ক হার তুলনামূলকভাবে কম, সরকারি ভর্তুকিও কম, ফলে চুক্তি করা সহজ হবে।
এদিকে ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্য—নিউইয়র্ক, কলোরাডো, অ্যারিজোনা, ইলিনয়সহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে। তাদের দাবি, ট্রাম্পের পদক্ষেপ বেআইনি এবং এতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে দেশ-বিদেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়েছে। যদিও অন্য দেশের পণ্যে শুল্ক স্থগিত করা হলেও চীনের ক্ষেত্রে তা বহাল রয়েছে। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা করছে। সংস্থাটি ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশ করেছে।