চরমপন্থা’র অভিযোগে রাশিয়ায় চার সাংবাদিকের সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড

- আপডেট সময় ১১:২২:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫০৫ বার পড়া হয়েছে
রাশিয়ায় স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের নতুন নজির হিসেবে এবার চার সাংবাদিককে সাড়ে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন মস্কোর নাগাতিনস্কি ডিস্ট্রিক্ট আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা প্রয়াত বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
দণ্ডিত সাংবাদিকরা হলেন আন্তোনিনা ফাভোরস্কায়া, কনস্তান্তিন গাবোভ, সের্গেই ক্যারেলিন ও আরতিয়ম ক্রিগার। গত মঙ্গলবার আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে ‘চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার’ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন। তবে অভিযুক্ত সবাই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তাঁরা শুধু তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন।
রাশিয়ার সরকার ২০২১ সালেই নাভালনির ‘এফবিকে’ নামক দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনকে বেআইনি ঘোষণা করে ‘চরমপন্থী’ আখ্যা দেয়। সমালোচকদের মতে, এটি ছিল মূলত রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করার একটি হাতিয়ার। এখন সেই সংস্থার সঙ্গে সাংবাদিকদের যোগাযোগ থাকার অভিযোগ তুলে তাঁদের সাজা দেওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের মধ্যে ফাভোরস্কায়া ও ক্রিগার ছিলেন স্বাধীন সংবাদমাধ্যম সোতা ভিশনের সঙ্গে যুক্ত। গাবোভ রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফ্রিল্যান্স প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। ক্যারেলিন ছিলেন একজন ভিডিও সাংবাদিক, যিনি নিয়মিত অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসে প্রতিবেদন পাঠাতেন।
সাংবাদিকতা সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে দেখছে। নাভালনির মৃত্যু নিয়ে যেভাবে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, একইভাবে এই সাংবাদিকদের সাজাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
নাভালনি দীর্ঘদিন ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো রাষ্ট্রক্ষমতাকে বারবার চাপে ফেলেছিল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাইবেরিয়ার একটি কারাগারে ১৯ বছরের সাজা ভোগ করার সময় রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুর আগেও তিনি ছিলেন প্রাণবন্ত ও রসিক, যা তাঁর মৃত্যু নিয়ে আরও সন্দেহ বাড়িয়েছে।
নাভালনির মৃত্যুর পর তাঁর অনুসারী ও সমর্থকদের প্রতি দমনপীড়ন আরও জোরদার হয়েছে। এই সাংবাদিকদের সাজাও সেই ধারাবাহিকতারই অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।