যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিতে বিরল খনিজ রপ্তানি সীমিত করল চীন
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত। বিরল খনিজের রপ্তানি এখন আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনছে দেশটি। এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে দেখছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন একটি শক্তিশালী ‘রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা’ চালু করছে, যার আওতায় নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির কাছে আর এসব গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পণ্য পৌঁছাবে না। অর্থাৎ, কৌশলগতভাবে চীন এখন বেছে বেছে রপ্তানির অনুমতি দেবে এবং প্রয়োজনে বন্ধও করে দিতে পারবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিরল খনিজের রপ্তানিকারক দেশ চীন। এই খনিজগুলো আধুনিক প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে অপরিহার্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি, সামরিক সরঞ্জাম ও রিনিউএবল এনার্জি প্রযুক্তিতে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। ফলে রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ বিশ্ববাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
চীনের এমন সিদ্ধান্তকে অনেকেই মনে করছেন রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেই। সম্প্রতি ওয়াশিংটন বিভিন্ন চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার পাল্টা জবাব হিসেবেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। চীন এভাবে কৌশলগত সম্পদের মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্যে নিজের অবস্থান আরও শক্ত করতে চাইছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলোকেও ভাবনায় ফেলবে। প্রযুক্তি উৎপাদনে বিকল্প খনিজ সরবরাহকারী দেশ খুঁজে পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনি উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে।
বাণিজ্যযুদ্ধে এই নতুন মোড় কীভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে চীন এখন শুধুমাত্র উৎপাদনের দেশ নয়, বরং রপ্তানিতেও বিশ্বরাজনীতিতে তার প্রভাব বিস্তার করছে নতুন কৌশলে।
বিশ্ব অর্থনীতির চালচিত্রে এই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কী প্রভাব ফেলবে, তা নজরে রাখছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে একে অনেকে বলছেন, প্রযুক্তি যুদ্ধে চীনের নতুন ‘কার্ড’ যা বেইজিং খুবই সচেতনভাবে খেলছে।