যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারে চীনের দৃঢ় আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে উত্তেজনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কের ভুল নীতি থেকে সরে এসে পারস্পরিক শ্রদ্ধার পথে ফিরে আসতে হবে।’
এর পেছনে কারণ, গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি দেশের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। যদিও শেষ মুহূর্তে তিনি ওই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন, তবে চীনের ক্ষেত্রে এই অবকাশ কার্যকর হয়নি। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বহাল রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশে।
যদিও মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, যেখানে চীনে উৎপাদিত পণ্যও অন্তর্ভুক্ত থাকার সম্ভাবনা ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটকিন পরে জানান, এই ছাড় সাময়িক এবং শিগগিরই সেমিকন্ডাক্টরের ওপর পৃথকভাবে শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি বলেন, ‘এসব পণ্য আমাদের আমেরিকাতেই উৎপাদন করতে হবে।’
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানান, সেমিকন্ডাক্টরের ওপর কর ছাড়ের খবর ‘ভুল’। বরং এই পণ্যগুলোকে জাতীয় নিরাপত্তার আওতায় শুল্ক তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বৈদ্যুতিক পণ্যের সরবরাহ চেইন ও সেমিকন্ডাক্টরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।’
এই অবস্থায় চীনের প্রতিক্রিয়াও এসেছে কড়া ভাষায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর ছাড়ের পদক্ষেপকে তারা ‘ছোট অগ্রগতি’ হিসেবে দেখছে। তবে এই পদক্ষেপের বাস্তব প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে এখনো বেইজিং গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রথমে চীনের পণ্যে ৫৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যা পরে বেড়ে দাঁড়ায় ১৪৫ শতাংশে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর প্রথমে ৩৪ শতাংশ, পরে ৮৪ শতাংশ এবং সর্বশেষে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
চীনের হুঁশিয়ারি, যুক্তরাষ্ট্র যদি বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তবে চীনও শেষ পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে যাবে। ফলে দুই দেশের এই উত্তেজনা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।