অর্থনীতি
নতুন মুদ্রানীতি আসছে, আবারও কি বাড়বে নীতি সুদের হার?
শীতের শুরুতে সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। গত বছরের অতিবৃষ্টির ফলে খাদ্যমূল্য বেড়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট হলেও এ বছর পরিস্থিতি অনেকটাই সহনীয়। তবে সামনে পবিত্র রমজান। আর এই সময়টায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার নজির অতীতে অনেকবার দেখা গেছে। ফলে রমজানের আগে জনমনে নতুন করে দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে।
দেশে প্রায় তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। সাধারণত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় অর্থনীতি আরও ক্ষতির মুখে পড়ে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যদি আবারও নীতি সুদহার বাড়ানো হয়, তাহলে সংকট আরও গভীর হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৭.৬৬ শতাংশে নেমেছে, যা গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। একই সময়ে মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এমনকি ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র নিষ্পত্তি গত বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ কমেছে।
ভোগ্যপণ্যের আমদানি কমলে বাজারে সরবরাহ হ্রাস পায়, যার ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। আর মূলধনি পণ্যের আমদানি কমে গেলে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানুয়ারির শেষ ভাগে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে। নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে তিন দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়ে তা ১০ শতাংশে উন্নীত করেছেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, উন্নত বিশ্বে নীতি সুদ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটি তেমন কার্যকর নয়। কারণ, এখানে ভোক্তা ঋণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। সুদহার বাড়ানোর বদলে দরকার অর্থনৈতিক চাহিদা বাড়ানোর কার্যকর নীতি।
এরপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রমজানে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে কোনো মার্জিন ছাড়াই ঋণপত্র খুলতে বলা হয়েছে। গভর্নরের আশাবাদ, এই পদক্ষেপ বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।