ঢাকা ০৯:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের আম কিনতে আগ্রহী চীন, চলতি মৌসুমেই বিপুল রপ্তানির আশা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৪১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে চীনের সফল আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকায় একটি আমবাগান পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সুস্বাদু ও মিষ্টি আমের জন্য চীনের বাজার উন্মুক্ত। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশি আম চাষীদের জন্য চীনে রপ্তানির খরচও কম, যা এই ব্যবসাকে আরও লাভজনক করে তুলবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, আম সংরক্ষণ ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীন সহযোগিতা করবে। আম রপ্তানির জন্য চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস (জিএসিসি) থেকে গত বছর জুলাইয়ে বাংলাদেশের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে আমের হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট, প্যাকেজিংসহ বিভিন্ন মান যাচাই করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে মে মাসের মধ্যভাগ থেকেই বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানি শুরু হতে পারে।

চীনা প্রতিনিধিদল এর আগে জেলার বিভিন্ন আমবাগান, গ্রেডিং, শর্টিং ও শোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করে আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, এ উদ্যোগ দেশের আম রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। আগামী জুন থেকেই চীনে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমনসহ বিভিন্ন জাতের আমগাছ ঘুরে দেখেন এবং আমচাষ পদ্ধতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রীসহ কয়েকজন আমদানিকারক প্রতিনিধি।

এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী, নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকারসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাগানমালিক ও কৃষকরা আম উৎপাদন এবং রপ্তানিযোগ্য আমের মান বজায় রাখার বিষয়ে প্রতিনিধি দলকে ধারণা দেন।

বাগানমালিক রফিকুল ইসলাম জানান, আগের বছরগুলোতে যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ৩৮টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছে। তবে চীনে এবার প্রথমবারের মতো রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলিতে পরিবহনে প্রতি কেজিতে ৪৮০-৫২০ টাকা খরচ হলেও চীনে তা মাত্র ৮০-৯০ টাকা, যা চাষীদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী জানান, চীন এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনতে আগ্রহী। চলতি মৌসুমে দেশের ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমি থেকে তিন লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ আম উৎপাদন ও রপ্তানিতে নতুন রেকর্ড গড়ার পথে রয়েছে বলে কর্মকর্তারা আশাবাদী।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের আম কিনতে আগ্রহী চীন, চলতি মৌসুমেই বিপুল রপ্তানির আশা

আপডেট সময় ০৩:৪১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

 

বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে চীনের সফল আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকায় একটি আমবাগান পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সুস্বাদু ও মিষ্টি আমের জন্য চীনের বাজার উন্মুক্ত। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশি আম চাষীদের জন্য চীনে রপ্তানির খরচও কম, যা এই ব্যবসাকে আরও লাভজনক করে তুলবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, আম সংরক্ষণ ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীন সহযোগিতা করবে। আম রপ্তানির জন্য চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস (জিএসিসি) থেকে গত বছর জুলাইয়ে বাংলাদেশের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে আমের হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট, প্যাকেজিংসহ বিভিন্ন মান যাচাই করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে মে মাসের মধ্যভাগ থেকেই বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানি শুরু হতে পারে।

চীনা প্রতিনিধিদল এর আগে জেলার বিভিন্ন আমবাগান, গ্রেডিং, শর্টিং ও শোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করে আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, এ উদ্যোগ দেশের আম রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। আগামী জুন থেকেই চীনে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমনসহ বিভিন্ন জাতের আমগাছ ঘুরে দেখেন এবং আমচাষ পদ্ধতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রীসহ কয়েকজন আমদানিকারক প্রতিনিধি।

এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী, নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকারসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাগানমালিক ও কৃষকরা আম উৎপাদন এবং রপ্তানিযোগ্য আমের মান বজায় রাখার বিষয়ে প্রতিনিধি দলকে ধারণা দেন।

বাগানমালিক রফিকুল ইসলাম জানান, আগের বছরগুলোতে যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ৩৮টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছে। তবে চীনে এবার প্রথমবারের মতো রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলিতে পরিবহনে প্রতি কেজিতে ৪৮০-৫২০ টাকা খরচ হলেও চীনে তা মাত্র ৮০-৯০ টাকা, যা চাষীদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী জানান, চীন এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনতে আগ্রহী। চলতি মৌসুমে দেশের ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমি থেকে তিন লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ আম উৎপাদন ও রপ্তানিতে নতুন রেকর্ড গড়ার পথে রয়েছে বলে কর্মকর্তারা আশাবাদী।