যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে চীন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা পিছু হটবে না। বরং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ‘শেষ পর্যন্ত’ লড়াই চালিয়ে যাবে এমনই সুর চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ‘ভুলের পর ভুল’ এবং এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা হুমকি আবারও প্রমাণ করে, তারা প্রতারণার পথেই হাঁটছে। চীন কখনোই এই অন্যায় মেনে নেবে না।”
চীন সতর্ক করে বলেছে, যদি ওয়াশিংটন তাদের অবস্থানে অনড় থাকে, তবে চীনও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। শক্তিশালী পদক্ষেপের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় কোনো দ্বিধা করা হবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চীনসহ কয়েকটি দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। চীনা পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে এ সপ্তাহেই। এর আগে ছিল ২০ শতাংশ শুল্ক। পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা কার্যকর হবে বৃহস্পতিবার থেকে।
তবে বিষয়টি এখানেই থেমে থাকছে না। ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, চীনের নতুন শুল্ক প্রত্যাহার না হলে, আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এই ঘোষণা দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনাকে আরও ঘনীভূত করেছে।
চীন একদিকে যেমন কূটনৈতিকভাবে আলোচনার দরজা খোলা রাখতে চায়, অন্যদিকে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে চাপে নতি স্বীকার করবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আবারও বলেছে, “বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ বিজয়ী হতে পারে না। আমরা আলোচনার পক্ষে, তবে সম্মানের ভিত্তিতে।”
বিশ্ব অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রাসী শুল্কনীতি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এমনকি রিপাবলিকান পার্টির অনেক নেতাও ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন, যা স্পষ্ট করে যে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সংঘাত বর্তমানে শুধু দুই দেশের নয়, বরং পুরো বিশ্বের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে উভয় পক্ষের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।