শুল্ক-যুদ্ধের ঘূর্ণিপাকে বিশ্ববাজার, শুল্ক নিয়ে উদ্বেগে একের পর এক ফোন কল হোয়াইট হাউসে : ট্রাম্প প্রশাসন
বিশ্ব অর্থনীতিতে আবারো অস্থিরতা। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ঘোষণায় কেঁপে উঠেছে আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজার। হোয়াইট হাউসে লাগাতার ফোন কল আসছে বাণিজ্য ও শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার জন্য এমনটাই জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই ধস নেমেছে নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জসহ বিশ্বের বড় বড় শেয়ারবাজারে। রবিবার থেকেই সূচক ছিল নিম্নমুখী, আর সোমবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যেই ডাও জোন্স সূচক পড়ে যায় ৩.৫৬ শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমে ৩.৮৫ শতাংশ। দুদিনেই এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমেছে ১০.৫ শতাংশ মার্চ ২০২০’র পর যা সর্ববৃহৎ পতন। এতে প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের লোকসান হয়েছে বাজারে।
ট্রাম্পের যুক্তি, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিশাল আর্থিক ঘাটতি’ পূরণের জন্যই এই শুল্ক আরোপ প্রয়োজন। তাঁর দাবি, বাইডেন প্রশাসনের সময় সৃষ্ট ঘাটতি এই পদক্ষেপেই পূরণ হবে।
ট্রাম্প বলেন, “ইতিমধ্যে নতুন শুল্ক চালু হয়ে গেছে। এটি একটি দারুণ পদক্ষেপ। অনেকে হয়তো এখনই বুঝবেন না, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি অনেক ভালো।”
এদিকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডেয়ার লাইয়েন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইইউ সমানভাবে পাল্টা শুল্ক আরোপে প্রস্তুত। আগামী সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এ বিষয়ে শুল্ক হ্রাসের অনুরোধ জানাবেন বলে জানা গেছে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারে ধস নেমেছে এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ারবাজারেও। ডিসেম্বরের রেকর্ড উচ্চতা থেকে নাসডাক সূচক পড়ে গেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্ক যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ট্রাম্প প্রশাসন কতটা নমনীয় হয়।