বিশ্বাসভঙ্গ মামলায় বিচারে জুকারবার্গ, ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ বিক্রির মুখে

- আপডেট সময় ০৭:৫৬:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
- / 12
মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট মেটার প্রধান এবং সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের বিরুদ্ধে ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) দায়ের করা একটি আলোচিত প্রতিযোগিতা বিরোধী মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে। সোমবার ওয়াশিংটনের একটি ফেডারেল আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে প্রতিযোগিতার মুখে না ফেলে বাজার থেকে সরিয়ে দিতে পরিকল্পিতভাবে কিনে নিয়েছে মেটা। এভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে তারা।
এফটিসির কৌঁসুলি ড্যানিয়েল ম্যাথসন আদালতে বলেন, “মেটা মনে করেছিল প্রতিযোগিতা কঠিন। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়ার চেয়ে তাদের কিনে নেওয়াই সহজ।” তিনি বলেন, মেটার এই কৌশল বাজারে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বড় বাধা তৈরি করেছে।
জাকারবার্গের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া একাধিক ই-মেইল প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ২০১১ সালে ফেসবুকের এক অভ্যন্তরীণ বার্তায় ইনস্টাগ্রামকে স্মার্টফোনে জনপ্রিয় একটি অ্যাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যা সহজেই ফেসবুকের সেবাগুলোর প্রতিযোগী হতে পারে। ২০১২ সালে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেওয়ার পরের এক ই-মেইলে বলা হয়, ইনস্টাগ্রামে নতুন কিছু না যোগ করে এটিকে কেবল চালু রাখলেই চলবে, যাতে হতাশ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা প্ল্যাটফর্ম না ছাড়েন।
জাকারবার্গ অবশ্য এসব ই-মেইলকে ‘প্রাথমিক আলোচনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। অপরদিকে মেটার আইনজীবী মার্ক হ্যানসেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য অধিগ্রহণ বেআইনি নয়। ফেসবুক বৈধভাবেই এই অধিগ্রহণ করেছে।”
২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কেনার ক্ষেত্রেও একই কৌশল অবলম্বন করেছে মেটা, এমনটাই দাবি করেছে এফটিসি। তাদের ভাষ্য, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে কিনে মেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
জানা গেছে, এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে পারেন ফেসবুকের সাবেক শীর্ষ নির্বাহী শেরিল স্যান্ডবার্গ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা। বিচারকাজ আট সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এ মামলা বন্ধ হবে বলে আশাবাদী ছিলেন জাকারবার্গ। তাই তিনি হোয়াইট হাউসে ঘন ঘন যাতায়াত এবং অভিষেক অনুষ্ঠানে অর্থায়ন করেছিলেন। এমনকি ওয়াশিংটনে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার দিয়ে একটি বিলাসবহুল বাড়িও কিনেছিলেন রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর আশায়।
তবে রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টায় সফল না হয়ে এখন তাঁকে এই আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। মামলায় পরাজিত হলে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ বিক্রি করতে হতে পারে মেটাকে।