ঢাকা ০৫:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ভয়েস অব আমেরিকার সম্প্রচার পুনরায় শুরুর আদেশ স্থগিত, বিলুপ্তির শঙ্কা শিক্ষার্থীদের মুচলেকা দিলে মামলা-জিডি প্রত্যাহারের ঘোষণা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টির নতুন অধিনায়ক হচ্ছেন লিটন দাস সাংবাদিকদের প্রশ্ন নিষিদ্ধ হোক, এটা আমি চাই না —তথ্য উপদেষ্টা নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস খুলল ৯ মাস পর, প্রথম দিনেই উপচে পড়া ভিড় অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণে এনবিআরের বিশেষ ইউনিট গঠনের উদ্যোগ ফিলিপাইনের বিমানবন্দরে গাড়ি দুর্ঘটনা: শিশুসহ নিহত ২ জন ১৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউজিসিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মালয়েশিয়ায় ‘বাংলাদেশি ইয়ুথ অ্যালায়েন্স’ চ্যাপ্টার কমিটি ২০২৫’ ঘোষণা রোহিঙ্গা সংকটে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে চুক্তি করেনি সরকার: খলিলুর রহমান

নারী ও শিশু ধর্ষণে ভয়াবহ উর্ধ্বগতি: মার্চেই ১৬৩টি মামলা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:১৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / 20

ছবি সংগৃহীত

 

মার্চ মাসে বাংলাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে, যা পুরো জাতিকে নাড়া দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, শুধু মার্চ মাসেই দেশে ১৬৩টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড হয়েছে। এই চিত্র শুধুমাত্র সংখ্যা নয়, এটি সমাজে নারীর নিরাপত্তাহীনতার একটি ভয়াবহ প্রতিচ্ছবি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অব্যাহত ধর্ষণের ঘটনা সমাজে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত বৈষম্য, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ফল। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, ভুক্তভোগীদের বড় একটি অংশ শিশু ও কিশোরী, যারা জীবনের সূচনাতেই নির্মমতার শিকার হচ্ছে।

ধর্ষণের শিকার নারীদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের পরিবারের। নিরাপত্তার অভাব, আইনি সেবা না পাওয়া এবং সামাজিক অপবাদ তাদের জীবনে দ্বিগুণ দুঃখ ডেকে আনে। ধর্ষণের পর বিচার পেতে বছরের পর বছর লেগে যায়, আর সেই সুযোগেই অনেক অপরাধী আইনের ফাঁক গলে পার পেয়ে যায়।

আইন থাকলেও কার্যকর প্রয়োগের অভাব স্পষ্ট। পুলিশ, হাসপাতাল ও বিচার বিভাগ তিনটি ক্ষেত্রেই সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। এছাড়া ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড়, ফরেনসিক রিপোর্ট, এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা সব কিছুতেই ঘাটতি রয়েছে।

সরকার ধর্ষণের ঘটনায় শাস্তি বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও, সমাজে সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার দিকে এখনও পর্যাপ্ত উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন, ভুক্তভোগীদের জন্য আলাদা সেবা কেন্দ্র, মানসিক চিকিৎসা ও আইন সহায়তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

শুধু আইন দিয়ে এই সংকট সমাধান সম্ভব নয়। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে একযোগে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। ছেলে সন্তানদের মানসিকভাবে সঠিক শিক্ষা ও নারী সম্মান করার নৈতিকতা শেখানো জরুরি।

মার্চ মাসের ১৬৩টি ধর্ষণের ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে নারীর নিরাপত্তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। এটি শুধু নারীর সমস্যা নয়, গোটা জাতির ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। তাই সময় এসেছে, এই ভয়াবহতা রোধে সরকার, সমাজ ও প্রতিটি নাগরিককে একসাথে এগিয়ে আসার। সহিংসতা রোধে আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা নয় এখনই সময় প্রতিরোধ গড়ার।

নিউজটি শেয়ার করুন

নারী ও শিশু ধর্ষণে ভয়াবহ উর্ধ্বগতি: মার্চেই ১৬৩টি মামলা

আপডেট সময় ১১:১৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

 

মার্চ মাসে বাংলাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে, যা পুরো জাতিকে নাড়া দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, শুধু মার্চ মাসেই দেশে ১৬৩টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড হয়েছে। এই চিত্র শুধুমাত্র সংখ্যা নয়, এটি সমাজে নারীর নিরাপত্তাহীনতার একটি ভয়াবহ প্রতিচ্ছবি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অব্যাহত ধর্ষণের ঘটনা সমাজে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত বৈষম্য, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ফল। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, ভুক্তভোগীদের বড় একটি অংশ শিশু ও কিশোরী, যারা জীবনের সূচনাতেই নির্মমতার শিকার হচ্ছে।

ধর্ষণের শিকার নারীদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের পরিবারের। নিরাপত্তার অভাব, আইনি সেবা না পাওয়া এবং সামাজিক অপবাদ তাদের জীবনে দ্বিগুণ দুঃখ ডেকে আনে। ধর্ষণের পর বিচার পেতে বছরের পর বছর লেগে যায়, আর সেই সুযোগেই অনেক অপরাধী আইনের ফাঁক গলে পার পেয়ে যায়।

আইন থাকলেও কার্যকর প্রয়োগের অভাব স্পষ্ট। পুলিশ, হাসপাতাল ও বিচার বিভাগ তিনটি ক্ষেত্রেই সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। এছাড়া ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড়, ফরেনসিক রিপোর্ট, এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা সব কিছুতেই ঘাটতি রয়েছে।

সরকার ধর্ষণের ঘটনায় শাস্তি বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও, সমাজে সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার দিকে এখনও পর্যাপ্ত উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন, ভুক্তভোগীদের জন্য আলাদা সেবা কেন্দ্র, মানসিক চিকিৎসা ও আইন সহায়তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

শুধু আইন দিয়ে এই সংকট সমাধান সম্ভব নয়। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে একযোগে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। ছেলে সন্তানদের মানসিকভাবে সঠিক শিক্ষা ও নারী সম্মান করার নৈতিকতা শেখানো জরুরি।

মার্চ মাসের ১৬৩টি ধর্ষণের ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে নারীর নিরাপত্তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। এটি শুধু নারীর সমস্যা নয়, গোটা জাতির ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। তাই সময় এসেছে, এই ভয়াবহতা রোধে সরকার, সমাজ ও প্রতিটি নাগরিককে একসাথে এগিয়ে আসার। সহিংসতা রোধে আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা নয় এখনই সময় প্রতিরোধ গড়ার।