০৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক। ফিফার শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হলেন ট্রাম্প ব্রাজিলে অবতরণের পর আগুনে পুড়ল এয়ারবাস এ-৩২০, অল্পের জন্য রক্ষা পেল যাত্রীরা পাক-আফগান সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি, উত্তেজনা চরমে

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ লবণসহিষ্ণু গমের জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:০১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • / 279

ছবি সংগৃহীত

 

 

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগ দেশের প্রথম উচ্চ লবণসহিষ্ণু গমের জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন করেছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ময়নুল হক ও অধ্যাপক মসিউল ইসলামের নেতৃত্বে গবেষণা চালিয়ে উদ্ভাবিত এই নতুন জাতের গম লবণাক্ত মাটি সহনশীল, উচ্চফলনশীল এবং অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯১টিতে, যা দেশের কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

অধ্যাপক মসিউল ইসলাম জানান, ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন দীর্ঘদিনের গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার ফল। উপকূলীয় ও লবণাক্ত অঞ্চলে ফসল উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে কৃষকের জন্য লাভজনক সমাধান দিতে এই জাতের গম উদ্ভাবনে কাজ শুরু করা হয়েছিল। এটি লবণাক্ত পরিবেশেও টিকে থাকতে সক্ষম এবং তুলনামূলকভাবে বেশি ফলন দিতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের মাঠে দীর্ঘ পরীক্ষার পর এই গমের জাতটি লবণসহিষ্ণু ও উচ্চফলনশীল হিসেবে প্রমাণিত হয়। পরে জাতীয় বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির তত্ত্বাবধানে দেশের ছয়টি স্থানে মাঠপর্যায়ে ফলন মূল্যায়ন করা হয়, যা সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ড গত ১৭ জুন ‘জিএইউ গম ১’-এর ছাড়পত্র দেয়।

নতুন এই গমের প্রোটিন শরীরের গঠন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া এর পর্যাপ্ত গ্লটেনিন থাকার কারণে এটি সহজে হজম হয় এবং লো-ফ্যাট খাদ্য হিসেবে দেহে দ্রুত শোষিত হয়। ল্যাবরেটরিতে ডিইউএসের ১৩টি বৈশিষ্ট্য যাচাই করে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, এটি সাধারণ গমের তুলনায় ভিন্ন গুণসম্পন্ন।

আমন মৌসুমের ধান কাটার পর এই গম চাষ করা হলে মাত্র ৯৫ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। এর গাছের আকার বড়, কাণ্ড শক্ত এবং শীষে বেশি গুটি থাকে বলে বেশি খড় পাওয়া যায়, যা গবাদিপশুর খাদ্য সরবরাহেও সহায়ক হবে। স্বাভাবিক মাটিতে এই গমের সম্ভাব্য ফলন প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ৫ টন এবং লবণাক্ত মাটিতে ৩ দশমিক ৭৫ টন পর্যন্ত হতে পারে।

মানবদেহে সোডিয়াম ক্লোরাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও পুষ্টি শোষণেও সহায়ক এই গম জলবায়ু সহনশীল এবং রোগ-পোকা প্রতিরোধে শক্তিশালী হওয়ায় দেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশে সহজেই চাষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ লবণসহিষ্ণু গমের জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন

আপডেট সময় ০৬:০১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

 

 

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগ দেশের প্রথম উচ্চ লবণসহিষ্ণু গমের জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন করেছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ময়নুল হক ও অধ্যাপক মসিউল ইসলামের নেতৃত্বে গবেষণা চালিয়ে উদ্ভাবিত এই নতুন জাতের গম লবণাক্ত মাটি সহনশীল, উচ্চফলনশীল এবং অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯১টিতে, যা দেশের কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

অধ্যাপক মসিউল ইসলাম জানান, ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন দীর্ঘদিনের গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার ফল। উপকূলীয় ও লবণাক্ত অঞ্চলে ফসল উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে কৃষকের জন্য লাভজনক সমাধান দিতে এই জাতের গম উদ্ভাবনে কাজ শুরু করা হয়েছিল। এটি লবণাক্ত পরিবেশেও টিকে থাকতে সক্ষম এবং তুলনামূলকভাবে বেশি ফলন দিতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের মাঠে দীর্ঘ পরীক্ষার পর এই গমের জাতটি লবণসহিষ্ণু ও উচ্চফলনশীল হিসেবে প্রমাণিত হয়। পরে জাতীয় বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির তত্ত্বাবধানে দেশের ছয়টি স্থানে মাঠপর্যায়ে ফলন মূল্যায়ন করা হয়, যা সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ড গত ১৭ জুন ‘জিএইউ গম ১’-এর ছাড়পত্র দেয়।

নতুন এই গমের প্রোটিন শরীরের গঠন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া এর পর্যাপ্ত গ্লটেনিন থাকার কারণে এটি সহজে হজম হয় এবং লো-ফ্যাট খাদ্য হিসেবে দেহে দ্রুত শোষিত হয়। ল্যাবরেটরিতে ডিইউএসের ১৩টি বৈশিষ্ট্য যাচাই করে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, এটি সাধারণ গমের তুলনায় ভিন্ন গুণসম্পন্ন।

আমন মৌসুমের ধান কাটার পর এই গম চাষ করা হলে মাত্র ৯৫ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। এর গাছের আকার বড়, কাণ্ড শক্ত এবং শীষে বেশি গুটি থাকে বলে বেশি খড় পাওয়া যায়, যা গবাদিপশুর খাদ্য সরবরাহেও সহায়ক হবে। স্বাভাবিক মাটিতে এই গমের সম্ভাব্য ফলন প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ৫ টন এবং লবণাক্ত মাটিতে ৩ দশমিক ৭৫ টন পর্যন্ত হতে পারে।

মানবদেহে সোডিয়াম ক্লোরাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও পুষ্টি শোষণেও সহায়ক এই গম জলবায়ু সহনশীল এবং রোগ-পোকা প্রতিরোধে শক্তিশালী হওয়ায় দেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশে সহজেই চাষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।