ঢাকা ১২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
খুলনায় ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইকের ২ যাত্রী নিহত, আহত ৪ অক্টোবরের মধ্যে ভাঙাচোড়া রাস্তা সংস্কার ও পুরোনো বাস সরানো হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা মেক্সিকোর একটি শ্মশান থেকে স্তূপীকৃত ৩৮১ মরদেহ উদ্ধার ইতিহাসে প্রথম চীনে অনুষ্ঠিত হলো এআই-চালিত হিউম্যানয়েড রোবট ফুটবল ম্যাচ পাকিস্তানে টানা বৃষ্টিতে বন্যা ও ঘরধস, প্রাণ হারাল আরও ৮ জন আবু সাঈদ হত্যা: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল সুদানের স্বর্ণখনি ধসে ১১ শ্রমিক নিহত, আহত ৭ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে এখনো পুরোপুরি আশ্বস্ত নয় বিএনপি: মোশাররফ হোসেন ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ আজ বিকেলে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার

গ্যাস সংকট কাটাতে ঋণের ফাঁদে জ্বালানি খাত, এলএনজি কেনার জন্য ৪২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে সরকার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:০১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • / 44

ছবি: সংগৃহীত

 

দেশের গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। কিন্তু চলমান ডলার সংকটের কারণে আমদানি বিল পরিশোধ কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৩৫ কোটি ডলার বা ৪ হাজার ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের কারিগরি সহায়তায় ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যেখানে গ্যারান্টার হিসেবে থাকবে বিশ্বব্যাংক। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জ্বালানি বিভাগ।

এদিকে, মার্কিন কোম্পানি শেভরনের গ্যাস বিল বকেয়া রয়েছে ১৫ কোটি ডলারের বেশি, আর এলএনজি আমদানির বিল বকেয়া ২০ কোটি ডলারের বেশি। সময়মতো পরিশোধ না হওয়ায় বিদেশি কোম্পানিগুলো এলএনজি সরবরাহে আগ্রহ হারাচ্ছে।

একসময় দেশে প্রতিদিন ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো, যা ২০১৮ সালের পর থেকে কমতে থাকে। বর্তমানে উৎপাদন নেমে এসেছে ১৯০ কোটি ঘনফুটের নিচে, আর আমদানি করা এলএনজি থেকে সরবরাহ হচ্ছে ৯৫ কোটি ঘনফুট। ঘাটতি মোকাবিলায় বিগত সরকার আমদানির ওপর নির্ভর করলেও গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়নি।

এর আগে সরকার আইটিএফসি থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে এলএনজি কিনেছিল। এবার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ২০ কোটি ডলার ঋণ নেওয়া হবে এলএনজি আমদানির জন্য, আর ৫ কোটি ডলার আসবে খোলাবাজার থেকে। বকেয়া পরিশোধে নেওয়া হবে আরও ১০ কোটি ডলার। এতে বিশ্বব্যাংক গ্যারান্টার হিসেবে কমিশন নেবে, বহুজাতিক ব্যাংকগুলো নেবে সুদ।

জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় ভালো কোম্পানিগুলো এলএনজি সরবরাহে আগ্রহী নয়। এ কারণে আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করাও জরুরি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ব্রুনেই ও সৌদি আরামকোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএনজি আমদানি বাড়ানোর নীতি গ্যাস খাতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। সাময়িকভাবে ঋণ নিয়ে আমদানি বিল শোধ করলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি নতুন সংকট তৈরি করবে। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের মতে, সুদসহ ঋণ নিয়ে দায় শোধের এই চক্র অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে ঋণ সংগ্রহ করাও কঠিন হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

গ্যাস সংকট কাটাতে ঋণের ফাঁদে জ্বালানি খাত, এলএনজি কেনার জন্য ৪২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে সরকার

আপডেট সময় ০৪:০১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

 

দেশের গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। কিন্তু চলমান ডলার সংকটের কারণে আমদানি বিল পরিশোধ কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৩৫ কোটি ডলার বা ৪ হাজার ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের কারিগরি সহায়তায় ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যেখানে গ্যারান্টার হিসেবে থাকবে বিশ্বব্যাংক। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জ্বালানি বিভাগ।

এদিকে, মার্কিন কোম্পানি শেভরনের গ্যাস বিল বকেয়া রয়েছে ১৫ কোটি ডলারের বেশি, আর এলএনজি আমদানির বিল বকেয়া ২০ কোটি ডলারের বেশি। সময়মতো পরিশোধ না হওয়ায় বিদেশি কোম্পানিগুলো এলএনজি সরবরাহে আগ্রহ হারাচ্ছে।

একসময় দেশে প্রতিদিন ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো, যা ২০১৮ সালের পর থেকে কমতে থাকে। বর্তমানে উৎপাদন নেমে এসেছে ১৯০ কোটি ঘনফুটের নিচে, আর আমদানি করা এলএনজি থেকে সরবরাহ হচ্ছে ৯৫ কোটি ঘনফুট। ঘাটতি মোকাবিলায় বিগত সরকার আমদানির ওপর নির্ভর করলেও গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়নি।

এর আগে সরকার আইটিএফসি থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে এলএনজি কিনেছিল। এবার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ২০ কোটি ডলার ঋণ নেওয়া হবে এলএনজি আমদানির জন্য, আর ৫ কোটি ডলার আসবে খোলাবাজার থেকে। বকেয়া পরিশোধে নেওয়া হবে আরও ১০ কোটি ডলার। এতে বিশ্বব্যাংক গ্যারান্টার হিসেবে কমিশন নেবে, বহুজাতিক ব্যাংকগুলো নেবে সুদ।

জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় ভালো কোম্পানিগুলো এলএনজি সরবরাহে আগ্রহী নয়। এ কারণে আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করাও জরুরি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ব্রুনেই ও সৌদি আরামকোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএনজি আমদানি বাড়ানোর নীতি গ্যাস খাতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। সাময়িকভাবে ঋণ নিয়ে আমদানি বিল শোধ করলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি নতুন সংকট তৈরি করবে। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের মতে, সুদসহ ঋণ নিয়ে দায় শোধের এই চক্র অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে ঋণ সংগ্রহ করাও কঠিন হবে।