যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত ইউক্রেন, রাশিয়ার সাড়া কী?

- আপডেট সময় ১১:০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
- / 36
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে ইউক্রেন। মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সংলাপ শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং স্থায়ীভাবে সংঘাত নিরসনের জন্য আলোচনার ভিত্তি তৈরিতে ইউক্রেন প্রস্তুত। তবে এই প্রস্তাবে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। উপস্থিত ছিলেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা ও প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়েরমাক। তবে আলোচনায় রাশিয়ার কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।
বৈঠক শেষে মার্কো রুবিও বলেন, “বল এখন রাশিয়ার কোর্টে। আমরা আশা করি, তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে। যদি না হয়, তবে বুঝতে পারব কী কারণে শান্তি প্রতিষ্ঠা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, এই প্রস্তাব রাশিয়ার কাছে পাঠানো হবে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন, তবে তিনি এই আলোচনায় অংশ নেননি। তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতি ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ, যা শুধু সমুদ্র ও আকাশপথেই নয়, সম্মুখ সারির লড়াইয়েও কার্যকর হওয়া উচিত।”
ইউক্রেনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, “এই উদ্যোগ ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।” ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা জানান, আসন্ন শান্তি আলোচনায় ইইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
লিথুনিয়ার নেতা গিতানাস নৌসেদা বলেছেন, “ইউক্রেন আবারও শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এবার রাশিয়ার জবাব দিতে হবে।” ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এটি ইউক্রেনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমাদের সবাইকে দ্রুত স্থায়ী শান্তিচুক্তির জন্য দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে, আশা করি প্রেসিডেন্ট পুতিনও এতে সম্মতি দেবেন।” তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। শান্তি ফেরাতে আমাদের আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।”
গত তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধে সম্প্রতি রাশিয়া বেশ কিছু সামরিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে, যার মধ্যে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত। এখন প্রশ্ন হলো, ইউক্রেনের সম্মতির পর রাশিয়া কী সিদ্ধান্ত নেবে? বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে মস্কোর প্রতিক্রিয়ার দিকে।