ঢাকা ১১:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়াল ইউরোপের দুই প্রভাবশালী দেশ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত ঢাকা থেকে বিদায় নিয়েছে ভুটান দল, রাতে আসছে সিঙ্গাপুরের ৪২ সদস্য বরগুনায় কোরবানির দিনে পশু কাটতে গিয়ে আহত ২০ জন ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সম্পন্ন : মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করলো বিএনপি ঈদের দিনেও গাজায় রক্তক্ষরণ: ইসরায়েলি হামলায় ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র ঈদুল আযহায় স্বাস্থ্যসচেতনতা: সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ঈদ করুন আর্জেন্টিনার জয় চিলিতে, গোল আলভারেজের

শুরু হলো গৌরবময় ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৩৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 77

 

ফেব্রুয়ারি বাঙালির চেতনায় এক বিশেষ মর্যাদার মাস। ভাষার অধিকারের জন্য আত্মদান করা শহীদদের স্মরণে বাঙালি এই মাসটিকে গর্ব ও ভালোবাসার সঙ্গে পালন করে আসছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতির দাবিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা আরও অনেকে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন। তাঁদের সেই আত্মত্যাগের ফসল আজকের স্বাধীন ভাষা, আজকের বাংলাদেশ।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠিত হয়। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান সরকার মাতৃভাষার অধিকারকে অস্বীকার করে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্ত পূর্ব বাংলার জনগণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বাংলাভাষীরা নিজেদের ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনে নেমে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করলে সরকার দমন-পীড়ন চালায় এবং ১৪৪ ধারা জারি করে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদী ছাত্ররা রাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মিছিল বের করে। মিছিলটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে পৌঁছালে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলেই শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে। তাঁদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৫৬ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

বাঙালির ভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়, যখন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। সেই থেকে বিশ্বব্যাপী দিনটি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার প্রতীক হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশে নানা আয়োজন হয়ে থাকে। এর মধ্যে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ অন্যতম, যেখানে ভাষা ও সাহিত্যপ্রেমীরা সমবেত হন। এই মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মাতৃভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা ও ভাষার বিকাশে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা।

ফেব্রুয়ারি শুধু একটি মাস নয়, এটি আমাদের ভাষার অস্তিত্ব ও জাতীয় চেতনায় এক অনন্য অধ্যায়। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের পথ ধরে আমরা এগিয়ে চলেছি, মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার শপথ নিয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

শুরু হলো গৌরবময় ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি

আপডেট সময় ১০:৩৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

ফেব্রুয়ারি বাঙালির চেতনায় এক বিশেষ মর্যাদার মাস। ভাষার অধিকারের জন্য আত্মদান করা শহীদদের স্মরণে বাঙালি এই মাসটিকে গর্ব ও ভালোবাসার সঙ্গে পালন করে আসছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতির দাবিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা আরও অনেকে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন। তাঁদের সেই আত্মত্যাগের ফসল আজকের স্বাধীন ভাষা, আজকের বাংলাদেশ।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠিত হয়। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান সরকার মাতৃভাষার অধিকারকে অস্বীকার করে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্ত পূর্ব বাংলার জনগণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বাংলাভাষীরা নিজেদের ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনে নেমে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করলে সরকার দমন-পীড়ন চালায় এবং ১৪৪ ধারা জারি করে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদী ছাত্ররা রাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মিছিল বের করে। মিছিলটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে পৌঁছালে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলেই শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে। তাঁদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৫৬ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

বাঙালির ভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়, যখন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। সেই থেকে বিশ্বব্যাপী দিনটি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার প্রতীক হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশে নানা আয়োজন হয়ে থাকে। এর মধ্যে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ অন্যতম, যেখানে ভাষা ও সাহিত্যপ্রেমীরা সমবেত হন। এই মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মাতৃভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা ও ভাষার বিকাশে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা।

ফেব্রুয়ারি শুধু একটি মাস নয়, এটি আমাদের ভাষার অস্তিত্ব ও জাতীয় চেতনায় এক অনন্য অধ্যায়। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের পথ ধরে আমরা এগিয়ে চলেছি, মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার শপথ নিয়ে।