কিংবদন্তি প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- আপডেট সময় ০৪:১৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
- / 4
‘প্লেব্যাক সম্রাট’ খ্যাত এন্ড্রু কিশোরের প্রয়াণ দিবস আজ। পাঁচ বছর আগে, ২০২০ সালের ৬ জুলাই কোটি ভক্তকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই কিংবদন্তি গায়ক। তার মৃত্যুতে বাংলা সংগীত অঙ্গনে তৈরি হয় এক অপূরণীয় শূন্যতা। আজ তার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী।
সুরের জাদুকর এন্ড্রু কিশোর তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৫ হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। মানুষের সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহ, হাসি-আনন্দ সব অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তার কণ্ঠে অনন্য মাত্রায়। তার গাওয়া ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কারে দেখাব মনের দুঃখ গো’, ‘তুমি আমার জীবন’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’সহ অজস্র গান আজও মানুষের হৃদয়ে অমলিন।
শুধু বাংলাদেশের গণ্ডিতেই নয়, এন্ড্রু কিশোর বলিউডেও রেখেছিলেন সাফল্যের ছাপ। ১৯৮৬ সালে আর.ডি. বর্মনের সুরে নির্মিত হিন্দি ছবি ‘শত্রু’র ‘ম্যায় তেরা বিসমিল হুঁ’ এবং ‘সুরজ চান্দা সাগর পর্বত’ গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়ে তিনি দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।
মুম্বাইয়ে সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে এন্ড্রু কিশোর বলেছিলেন, পরিচালক প্রমোদ চক্রবর্তীর আমন্ত্রণে তিনি সরাসরি তার বাসায় উঠেছিলেন। আর.ডি. বর্মন তাকে স্নেহভরে ডাকতেন ‘ঢাকাইয়া’ নামে এবং নিজের বাসায় নিয়মিত আসতে বলেছিলেন। গান তৈরির সময়কার সেই সান্নিধ্য ছিল এন্ড্রু কিশোরের জীবনের বড় পাওয়া।
তাকে মুম্বাইয়ে থেকে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন আর.ডি. বর্মন। কিন্তু এন্ড্রু কিশোর জানিয়ে দেন, নিজের দেশেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে চান। বিদায়বেলায় আর.ডি. বর্মন তাকে বুকে টেনে নিয়ে বলেছিলেন, “তুই একটা বাঘের বাচ্চা।”
গানের এই মহাতারকা জীবনে পেয়েছেন অগণিত স্বীকৃতি ও সম্মাননা। আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পাঁচবার বাচসাস, দুবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
দীর্ঘদিন শারীরিক সমস্যায় ভুগে ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যান এন্ড্রু কিশোর। সেখানেই ধরা পড়ে ক্যান্সার। কয়েক মাস চিকিৎসা শেষে ২০২০ সালের জুনে দেশে ফিরে রাজশাহীতে বড় বোনের বাসায় শেষ দিনগুলো কাটান। ৬ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে ১৫ জুলাই রাজশাহীর খ্রিস্টান কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
আজ এই অমর শিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তার অনন্ত স্মৃতিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বাংলা সংগীতপ্রেমী মানুষ।