মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য: বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

- আপডেট সময় ০১:০২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
- / 10
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, সরকারিভাবে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও কঠোরভাবে এটি ৫ শতাংশে আনার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘গুগল পে’ সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি দেশের আর্থিক খাত, ব্যাংকিং সেক্টর এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন।
গভর্নর বলেন, “আমরা যদি মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে আনতে পারি, তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।” তিনি জানান, দেশের আর্থিক খাতকে আধুনিক ও ঝুঁকমুক্ত করতে ইতোমধ্যে ২০টি ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আরও সাতটি ব্যাংকের নিরীক্ষা শেষ হবে।
ব্যাংকিং খাত যেন পূর্বের দুর্বল অবস্থানে ফিরে না যায়, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি চলছে বলেও জানান তিনি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের ধাপে ধাপে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে গভর্নর বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আমরা এখন ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে অগ্রসর হচ্ছি। গুগল পে চালু হওয়ায় বাংলাদেশ ডিজিটাল লেনদেনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।” তিনি বলেন, শুধু নগদ লেনদেন নির্ভরতা কমালেই হবে না, বরং নিরাপদ ও স্বচ্ছ লেনদেন ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও জরুরি।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, “যদি বিদেশিরা এখানে কাজ করে, তাহলে দেশেরই উপকার হবে। টাকা পাচারের ভয় না পেয়ে বরং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে।”
ডলারের বাজার মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে গভর্নর স্পষ্ট করে বলেন, “দুবাই থেকে বাংলাদেশের ডলারের দাম নির্ধারণ হতে পারে না। এজন্য আমরা ডলার বাজারকে মুক্ত করে দিয়েছি, যাতে স্বাভাবিকভাবে এর দাম স্থির হয়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুগল পে এবং ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বক্তারা বলেন, গুগল পে চালুর মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এর ফলে দেশে ডিজিটাল লেনদেন আরও সহজ, স্বচ্ছ ও নিরাপদ হবে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার লক্ষ্য পূরণেও এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।