ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমা নিষ্ক্রিয় করতে জার্মানিতে নজিরবিহীন অভিযান নেত্রকোনার বিজয়পুর সীমান্ত দিয়ে ৩২ বাংলাদেশিকে পুশইন করলো বিএসএফ উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানে ১৪ সন্ত্রাসী নিহত গুমের সাথে জড়িতদের বিচার বাংলাদেশেই হবে: প্রেস সচিব বাজেট নিয়ে ট্রাম্পকে তীব্র আক্রমণ ইলন মাস্কের: ‘এই বিল অমানবিক ও জঘন্য’ জাতীয় পরিবেশ পদক পাচ্ছেন ৩ ব্যক্তি ও ৩ প্রতিষ্ঠান সবার জন্য জরুরি সতর্কতা বার্তা দিল পুলিশ পারমাণবিক চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতীয় স্বার্থবিরোধী: খামেনি কোরবানির আত্মত্যাগে তাকওয়া ও আন্তরিকতার গুরুত্ব ভুয়া সংবাদে বিভ্রান্তি ছড়ালে আইনি ব্যবস্থা: উপ-প্রেস সচিব

সিলেটে টিলা ধসে এক পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৪২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / 10

ছবি সংগৃহীত

 

 

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় টিলা ধসে মাটিচাপায় একই পরিবারের চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার ৭ নম্বর লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বখ্তিয়ার ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে পরিচিত হয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন নামের একজন ব্যক্তি। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খলকুর রহমান।

চেয়ারম্যান খলকুর রহমান জানান, “রাত দুইটার দিকে আকস্মিক টিলা ধসের খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। আমরা দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেই। তবে বৈরী আবহাওয়া ও দুর্যোগপূর্ণ সড়ক পরিস্থিতির কারণে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় চার ঘণ্টা বিলম্ব হয়।”

তিনি আরও বলেন, “গোলাপগঞ্জের রাখালগঞ্জ এলাকায় ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে রাস্তার উপর বিশাল গাছ পড়ে যায়। এতে মূল সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে ঢাকাদক্ষিণ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের দল বাধার সম্মুখীন হয় এবং ভোর ৬টার পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।”

স্থানীয়দের সহায়তায় সকাল ৭টার দিকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল।

চেয়ারম্যান জানান, “আমরা রাতেই উদ্ধার কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম ধসের পর কিছু মানুষকে সরিয়ে আনার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় টিলা আবার ভেঙে পড়ে এবং আরও মানুষ মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। তখন উদ্ধার কাজ বন্ধ রেখে নিরাপদে সবাইকে সরিয়ে নিই।”

তিনি জানান, “প্রতিবেশী আরেকজনের বাড়ির দিকেও আরেকটি টিলা ধসে পড়ছে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমি স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে মানুষ ও গবাদিপশু সরিয়ে আনি। এরপর থেকেই আমরা ফায়ার সার্ভিসের অপেক্ষায় ছিলাম।”

এই ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলে টিলা ধসের ঝুঁকি ছিল, তবে এবার তা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা দ্রুত পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

সিলেটে টিলা ধসে এক পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় ১০:৪২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

 

 

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় টিলা ধসে মাটিচাপায় একই পরিবারের চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার ৭ নম্বর লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বখ্তিয়ার ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে পরিচিত হয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন নামের একজন ব্যক্তি। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খলকুর রহমান।

চেয়ারম্যান খলকুর রহমান জানান, “রাত দুইটার দিকে আকস্মিক টিলা ধসের খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। আমরা দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেই। তবে বৈরী আবহাওয়া ও দুর্যোগপূর্ণ সড়ক পরিস্থিতির কারণে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় চার ঘণ্টা বিলম্ব হয়।”

তিনি আরও বলেন, “গোলাপগঞ্জের রাখালগঞ্জ এলাকায় ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে রাস্তার উপর বিশাল গাছ পড়ে যায়। এতে মূল সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে ঢাকাদক্ষিণ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের দল বাধার সম্মুখীন হয় এবং ভোর ৬টার পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।”

স্থানীয়দের সহায়তায় সকাল ৭টার দিকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল।

চেয়ারম্যান জানান, “আমরা রাতেই উদ্ধার কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম ধসের পর কিছু মানুষকে সরিয়ে আনার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় টিলা আবার ভেঙে পড়ে এবং আরও মানুষ মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। তখন উদ্ধার কাজ বন্ধ রেখে নিরাপদে সবাইকে সরিয়ে নিই।”

তিনি জানান, “প্রতিবেশী আরেকজনের বাড়ির দিকেও আরেকটি টিলা ধসে পড়ছে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমি স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে মানুষ ও গবাদিপশু সরিয়ে আনি। এরপর থেকেই আমরা ফায়ার সার্ভিসের অপেক্ষায় ছিলাম।”

এই ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলে টিলা ধসের ঝুঁকি ছিল, তবে এবার তা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা দ্রুত পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।