ঢাকা ০১:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ভাসানচরে ট্রলারডুবি: দুইজনের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ এখনও তিনজন শীর্ষ দলকে কোণঠাসা করে পোষ্য দলকে প্রশ্রয় দিচ্ছে সরকার: ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু নতুন ডিজাইনের ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট আজ থেকে বাজারে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণে ১০ জুন লন্ডন যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচার শুরু রোববার : ঘোষণা আসিফ নজরুলের গা/জা/য় ই*স*রা*য়ে*লি সেনা প্রত্যাহার ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত জানাল হামাস তুরস্কে বিরোধী দল লক্ষ্য করে পঞ্চম দফা ধরপাকড়, গ্রেপ্তার ৩০ জামায়াতের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে ইসি নাইজেরিয়ার কানো প্রদেশে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ২১ ক্রীড়াবিদের মৃত্যু

শখের আম চাষে কুয়াকাটার ইসাহাক এখন লাখপতি চাষি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৫১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 10

ছবি সংগৃহীত

 

 

তাবলিগে গিয়ে রাজশাহীর আম বাগান দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটার কৃষক ইসাহাক মুন্সি। সেখানেই জন্ম নেয় আম চাষের স্বপ্ন। ফিরে এসেই ২০০৯ সালে রাজশাহী থেকে নিয়ে আসেন ৫০টি আমের চারা। পরের বছর নিজ বাড়ির আঙিনায় শুরু করেন শখের বাগান। সেই শখই আজ তাঁকে এনে দিয়েছে সফলতার স্বাদ।

ইসাহাক মুন্সির একটি পুরোনো গাছ থেকেই এবছর তিনি বিক্রি করেছেন এক লাখ টাকার বেশি আম। এখনও গাছে থাকা আম দিয়ে আরও ১০-২০ হাজার টাকার বিক্রির আশা করছেন। শুধুমাত্র একটি গাছ থেকেই তিনি পেয়েছেন প্রায় ৪০ মণ আম। এ ছাড়া বাড়ির আশেপাশের ৩-৪ একর জমিতে চাষ করেছেন ২০০টিরও বেশি আম গাছ। ল্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর, আশ্বিনা, লকনা, কিউজাই, ব্যানানা ম্যাংগোসহ রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা জাতের আম।

স্বাদে সুমিষ্ট, কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় তাঁর আম বাজারে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি দরে এসব আম বিক্রি হয় ৪০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উপজেলাজুড়েই এখন ‘কুয়াকাটার আম’ নামে পরিচিতি পেয়েছে এই আম।

কৃষক ইসাহাক মুন্সি বলেন, ‘আমার বাগানে অনেকেই ঘুরতে আসেন, ছবি তোলেন, আম কিনে নেন, অনেকে ফোনে কুরিয়ার করতে বলেন। এটা আমার জন্য খুব আনন্দের। তবে দুঃখের বিষয়, আমরা যারা এই এলাকায় আম চাষে সফল হয়েছি, তারা কৃষি অফিস থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। যদি সরকার একটু নজর দিত, তাহলে পুরো এলাকার আমের চাহিদা আমরা মেটাতে পারতাম।’

প্রতিবেশী মো. ইলিয়াস হোসাইন বলেন, ‘আগে আম কিনতে উত্তরবঙ্গের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। এখন কুয়াকাটার এই বাগান থেকেই আমরা প্রয়োজনীয় আম সংগ্রহ করতে পারছি।’

একই এলাকার কৃষক আ. কুদ্দুস বলেন, ‘ইসাহাক মুন্সির গাছ থেকেই এবার ৩৫-৩৮ মণ আম বিক্রি হয়েছে। এমন ফলন আমাদের কারও হয়নি। এখন তার নামেই “কুয়াকাটার আম” পরিচিতি পেয়েছে।’

কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পটুয়াখালী ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ইসাহাক ভাইয়ের বাগানের গল্প শুনছিলাম। এবার এসে নিজেই খেয়ে দেখলাম, কিনেও নিয়ে যাচ্ছি। কুয়াকাটার ভ্রমণে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে এই বাগান ঘিরে।’

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, ‘ইসাহাক মুন্সিকে সফল চাষি বলা যায়। গত কয়েক বছরে কলাপাড়ায় আম চাষে বড় পরিবর্তন এসেছে। এ বছর উপজেলায় ২০০টির মতো ছোট-বড় আম বাগান হয়েছে, প্রায় ১০০ হেক্টর জমি জুড়ে। আমরা চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। তবে এখনো চারা বা কীটনাশক দেওয়ার সুযোগ হয়নি। বরাদ্দ পেলে তা সরবরাহ করব।’

ইসাহাক মুন্সি এখন প্রতি বছর ৫-৬ লাখ টাকার আম বিক্রির স্বপ্ন দেখেন। তার উদ্যোগ কুয়াকাটার কৃষিতে এনে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

শখের আম চাষে কুয়াকাটার ইসাহাক এখন লাখপতি চাষি

আপডেট সময় ১২:৫১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

 

 

তাবলিগে গিয়ে রাজশাহীর আম বাগান দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটার কৃষক ইসাহাক মুন্সি। সেখানেই জন্ম নেয় আম চাষের স্বপ্ন। ফিরে এসেই ২০০৯ সালে রাজশাহী থেকে নিয়ে আসেন ৫০টি আমের চারা। পরের বছর নিজ বাড়ির আঙিনায় শুরু করেন শখের বাগান। সেই শখই আজ তাঁকে এনে দিয়েছে সফলতার স্বাদ।

ইসাহাক মুন্সির একটি পুরোনো গাছ থেকেই এবছর তিনি বিক্রি করেছেন এক লাখ টাকার বেশি আম। এখনও গাছে থাকা আম দিয়ে আরও ১০-২০ হাজার টাকার বিক্রির আশা করছেন। শুধুমাত্র একটি গাছ থেকেই তিনি পেয়েছেন প্রায় ৪০ মণ আম। এ ছাড়া বাড়ির আশেপাশের ৩-৪ একর জমিতে চাষ করেছেন ২০০টিরও বেশি আম গাছ। ল্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর, আশ্বিনা, লকনা, কিউজাই, ব্যানানা ম্যাংগোসহ রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা জাতের আম।

স্বাদে সুমিষ্ট, কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় তাঁর আম বাজারে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি দরে এসব আম বিক্রি হয় ৪০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উপজেলাজুড়েই এখন ‘কুয়াকাটার আম’ নামে পরিচিতি পেয়েছে এই আম।

কৃষক ইসাহাক মুন্সি বলেন, ‘আমার বাগানে অনেকেই ঘুরতে আসেন, ছবি তোলেন, আম কিনে নেন, অনেকে ফোনে কুরিয়ার করতে বলেন। এটা আমার জন্য খুব আনন্দের। তবে দুঃখের বিষয়, আমরা যারা এই এলাকায় আম চাষে সফল হয়েছি, তারা কৃষি অফিস থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। যদি সরকার একটু নজর দিত, তাহলে পুরো এলাকার আমের চাহিদা আমরা মেটাতে পারতাম।’

প্রতিবেশী মো. ইলিয়াস হোসাইন বলেন, ‘আগে আম কিনতে উত্তরবঙ্গের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। এখন কুয়াকাটার এই বাগান থেকেই আমরা প্রয়োজনীয় আম সংগ্রহ করতে পারছি।’

একই এলাকার কৃষক আ. কুদ্দুস বলেন, ‘ইসাহাক মুন্সির গাছ থেকেই এবার ৩৫-৩৮ মণ আম বিক্রি হয়েছে। এমন ফলন আমাদের কারও হয়নি। এখন তার নামেই “কুয়াকাটার আম” পরিচিতি পেয়েছে।’

কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পটুয়াখালী ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ইসাহাক ভাইয়ের বাগানের গল্প শুনছিলাম। এবার এসে নিজেই খেয়ে দেখলাম, কিনেও নিয়ে যাচ্ছি। কুয়াকাটার ভ্রমণে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে এই বাগান ঘিরে।’

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, ‘ইসাহাক মুন্সিকে সফল চাষি বলা যায়। গত কয়েক বছরে কলাপাড়ায় আম চাষে বড় পরিবর্তন এসেছে। এ বছর উপজেলায় ২০০টির মতো ছোট-বড় আম বাগান হয়েছে, প্রায় ১০০ হেক্টর জমি জুড়ে। আমরা চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। তবে এখনো চারা বা কীটনাশক দেওয়ার সুযোগ হয়নি। বরাদ্দ পেলে তা সরবরাহ করব।’

ইসাহাক মুন্সি এখন প্রতি বছর ৫-৬ লাখ টাকার আম বিক্রির স্বপ্ন দেখেন। তার উদ্যোগ কুয়াকাটার কৃষিতে এনে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা।