পারমাণবিক কর্মসূচিতে বিধিনিষেধ মানতে প্রস্তুত ইরান, শর্ত শুধু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

- আপডেট সময় ১২:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
- / 3
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী শামখানি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়, তাহলে তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ মেনে নিতে প্রস্তুত।
বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শামখানি বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। একইসঙ্গে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি।
সাংবাদিকের প্রশ্নে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তিতে ইরান যেতে পারে কি না এর জবাবে শামখানি বলেন, “হ্যাঁ, যদি নিষেধাজ্ঞাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়া হয়।”
এই বক্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে চতুর্থ দফায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রোববার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক ছিল দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরান ও কয়েকটি পশ্চিমা দেশের মধ্যে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে গেলে ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তির বাধ্যবাধকতা থেকে পিছিয়ে আসে।
চুক্তিতে ইরানকে ৩.৬৭ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ৯০ শতাংশে পৌঁছালে তা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী হয়ে ওঠে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সম্প্রতি মন্তব্য করেন, “ইরানই একমাত্র দেশ, যারা পারমাণবিক অস্ত্র না থাকা সত্ত্বেও এত উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।”
পশ্চিমা দেশগুলো বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। তবে তেহরান শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে আলোচনা চলাকালেই ওয়াশিংটন আবারও ইরানের তেল খাত ও পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাটি ঘোষণা করা হয়েছে গত সোমবার।