সুন্দরবন সুরক্ষায় নতুন কৌশলে বন বিভাগ, ফাঁদ জমা দিলে মিলছে পুরস্কার

- আপডেট সময় ০৭:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
- / 3
সুন্দরবনে হরিণ শিকার ও বিষ প্রয়োগে মাছ ধরার মতো পরিবেশবিরোধী অপরাধ রোধে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে পশ্চিম বন বিভাগ। এবার স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে অপরাধ দমনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলে, বাওয়ালি কিংবা স্থানীয় কেউ যদি সুন্দরবনের ভেতর থেকে ফাঁদ বা নিষিদ্ধ জাল উদ্ধার করে জমা দেন, তাহলে প্রতি কেজিতে ২ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। শুধু তাই নয়, কেউ বনের ভেতর কোনো ফাঁদের অস্তিত্ব টের পেলে তা বন কর্মকর্তাদের জানালেই, সেই ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিয়ে ফাঁদ উদ্ধার করতে পারবেন।
‘সুরক্ষা প্রকল্প’ নামে এই কার্যক্রমে মূলত বাওয়ালি, মৌয়াল ও জেলেদের বন সুরক্ষায় অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বনজ সম্পদ রক্ষা এবং বন্যপ্রাণী নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য।
স্থানীয়রা বলছেন, কিছু অসাধু জেলে ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া শিকারের অজুহাতে হরিণ শিকারে লিপ্ত হচ্ছে। এতে হরিণের অস্তিত্ব যেমন হুমকির মুখে পড়ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।
পরিবেশবিদদের মতে, সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় হরিণ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। এই প্রাণীর সংখ্যা কমে গেলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ব্যাহত হবে এবং জৈবিক চক্রে বিঘ্ন ঘটবে।
পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এজেডএম হাসানুর রহমান জানান, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও অপরাধ দমনই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। স্থানীয়দের বন সুরক্ষায় অংশীদার করতে পুরস্কারভিত্তিক এই কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “হরিণ শিকার, বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও অন্যান্য অবৈধ কার্যক্রম ঠেকাতে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি চালু করেছি। পাশাপাশি বনভিত্তিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনাও অব্যাহত আছে।”
বন বিভাগের এসব পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। তাদের মতে, সুন্দরবন রক্ষায় স্থানীয়দের সক্রিয় অংশগ্রহণই হতে পারে টেকসই সুরক্ষার একমাত্র উপায়।