ঢাকা ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এআই চ্যাটবট নিয়ে গুরুতর তথ্য ফাঁস স্বীকার করল মেটা নবীগঞ্জে ৩০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক সংগ্রাম-শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ৮১ বছরে খালেদা জিয়া রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ড্রোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলছে লিথুয়ানিয়া এআই–ভিত্তিক হার্ডওয়্যারে বড় উদ্যোগ নিচ্ছে অ্যাপল জেরুজালেমকে চিরতরে ছিনিয়ে নিতে ই-ওয়ান বসতি প্রকল্প পুনরুজ্জীবনের ঘোষণা ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলল ইউরোপ সিরিয়ার পুনর্গঠনে ইদলিব হবে কেন্দ্রবিন্দু: প্রেসিডেন্ট শারআ নির্বাচন করলে তফসিলের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেব: আসিফ মাহমুদ রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে: সালাহউদ্দিন

মানিকগঞ্জে অসময়ের যমুনার ভাঙন: হুমকির মুখে শতাধিক ঘরবাড়ি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:৩২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / 59

ছবি সংগৃহীত

 

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাট থেকে গান্ধাইল পর্যন্ত যমুনার পাড়জুড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে অকাল ভাঙন। এতে তীব্র হুমকির মুখে পড়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী প্রমীলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত তেওতা জমিদার বাড়ি, আশপাশের হাট-বাজার, আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাজারো বসতবাড়ি।

ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বহু ফসলি জমি। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই যদি এমন পরিস্থিতি হয়, তাহলে স্রোতের তোড়ে পুরো এলাকা যমুনায় বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যেতে পারে ঐতিহাসিক তেওতা অঞ্চল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তেওতা জমিদার বাড়ির নিকটবর্তী নদীর পাড়ে প্রতিদিনই একটু একটু করে ভাঙন ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে গান্ধাইল, জমিদারবাড়ি ও সমেজঘর পয়েন্টে ভাঙন বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে উজান থেকে আসা প্রবল স্রোত এখন সরাসরি পূর্ব পাড়ে আঘাত হানছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বর্ষায় নদীর মাঝখানে একটি বিশাল চর জেগে ওঠে। এর ফলে যমুনার পূর্ব দিকে তৈরি হয় নতুন একটি প্রবাহপথ, যেখান দিয়ে পানি সরাসরি পাড়ে ধাক্কা দিচ্ছে। এ কারণে বর্ষার আগেই শুরু হয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এর ফলে প্রাচীন জমিদার বাড়ি, বাজার, স্কুল-কলেজসহ অসংখ্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো দর্শনার্থী নজরুল-প্রমীলার স্মৃতিবিজড়িত তেওতা জমিদার বাড়ি দেখতে আসেন। তবে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাও এখন বিলুপ্তির শঙ্কায়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, ‘নদীর গতি পরিবর্তনের কারণে তেওতার কয়েকটি পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। হাজারো মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।’

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকা আমরা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেখানে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে।’

স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সময়মতো উদ্যোগ না নিলে ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ তেওতার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যেতে পারে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।

নিউজটি শেয়ার করুন

মানিকগঞ্জে অসময়ের যমুনার ভাঙন: হুমকির মুখে শতাধিক ঘরবাড়ি

আপডেট সময় ০২:৩২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

 

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাট থেকে গান্ধাইল পর্যন্ত যমুনার পাড়জুড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে অকাল ভাঙন। এতে তীব্র হুমকির মুখে পড়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী প্রমীলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত তেওতা জমিদার বাড়ি, আশপাশের হাট-বাজার, আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাজারো বসতবাড়ি।

ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বহু ফসলি জমি। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই যদি এমন পরিস্থিতি হয়, তাহলে স্রোতের তোড়ে পুরো এলাকা যমুনায় বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যেতে পারে ঐতিহাসিক তেওতা অঞ্চল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তেওতা জমিদার বাড়ির নিকটবর্তী নদীর পাড়ে প্রতিদিনই একটু একটু করে ভাঙন ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে গান্ধাইল, জমিদারবাড়ি ও সমেজঘর পয়েন্টে ভাঙন বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে উজান থেকে আসা প্রবল স্রোত এখন সরাসরি পূর্ব পাড়ে আঘাত হানছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বর্ষায় নদীর মাঝখানে একটি বিশাল চর জেগে ওঠে। এর ফলে যমুনার পূর্ব দিকে তৈরি হয় নতুন একটি প্রবাহপথ, যেখান দিয়ে পানি সরাসরি পাড়ে ধাক্কা দিচ্ছে। এ কারণে বর্ষার আগেই শুরু হয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এর ফলে প্রাচীন জমিদার বাড়ি, বাজার, স্কুল-কলেজসহ অসংখ্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো দর্শনার্থী নজরুল-প্রমীলার স্মৃতিবিজড়িত তেওতা জমিদার বাড়ি দেখতে আসেন। তবে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাও এখন বিলুপ্তির শঙ্কায়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, ‘নদীর গতি পরিবর্তনের কারণে তেওতার কয়েকটি পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। হাজারো মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।’

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকা আমরা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেখানে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে।’

স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সময়মতো উদ্যোগ না নিলে ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ তেওতার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যেতে পারে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।