ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র ঈদুল আযহায় স্বাস্থ্যসচেতনতা: সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ঈদ করুন আর্জেন্টিনার জয় চিলিতে, গোল আলভারেজের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ওমানে ৬৪৫ কারাবন্দিকে ক্ষমা দিলেন সুলতান হাইথাম দুবাইয়ে ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন, ঈদগাহে মুসল্লিদের ঢল বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে ফের অন্তঃসত্ত্বা ‘দৃশ্যম’ অভিনেত্রী ঈশিতা দত্ত, প্রকাশ্যে বেবি বাম্প বেলুন, রশি আর জেদ, এই তিন দিয়েই ডুবন্ত যুদ্ধজাহাজ তুলল উত্তর কোরিয়া 🕋 পবিত্র হজ আজ পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ গাড়ি

অবশেষে সমাপ্তি ঘটলো পিকেকের ৪০ বছরের সশস্ত্র লড়াইয়ের

তুরস্ক, পিকেক, সশস্ত্রলড়াই
  • আপডেট সময় ১১:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • / 7

ছবি সংগৃহীত

 

চার দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়া কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) অবশেষে দল বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে। অস্ত্র পরিত্যাগ করে সংগঠনটি জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ সম্পন্ন করেছে, এখন থেকে কুর্দিদের অধিকার আদায়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিই হবে প্রধান পথ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা ফিরাত নিউজ এজেন্সি এবং এএনএফ এই ঘোষণা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, পিকেকে নিজেদের সশস্ত্র কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করছে এবং সংগঠন বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গত রবিবার গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, তারা স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে তুরস্ক-পিকেকে সংঘাতের ৪০ বছরের রক্তাক্ত অধ্যায়ের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিকেকের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান দলের বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের প্রতি দল বিলুপ্তির আহ্বান জানান। কারাগার থেকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, “রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই।”

৭৬ বছর বয়সী ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কের মর্মর সাগরের একটি দ্বীপে নির্জন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দল বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তার জামিনে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি, যাদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে পিকেকে ১৯৮৪ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। যদিও পরবর্তীতে তারা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির বদলে কুর্দিদের অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের দিকে মনোযোগ দেয়।

তাদের এই বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। তুরস্কসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র পিকেকে-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি বাহিনীর টানা অভিযানে এবং ইরাক ও সিরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতায় পিকেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। এরই মধ্যে দলটির এ ধরনের সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষকরা একটি যুগান্তকারী মোড় হিসেবে দেখছেন, যা তুরস্ক এবং কুর্দিদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

অবশেষে সমাপ্তি ঘটলো পিকেকের ৪০ বছরের সশস্ত্র লড়াইয়ের

আপডেট সময় ১১:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

 

চার দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়া কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) অবশেষে দল বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে। অস্ত্র পরিত্যাগ করে সংগঠনটি জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ সম্পন্ন করেছে, এখন থেকে কুর্দিদের অধিকার আদায়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিই হবে প্রধান পথ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা ফিরাত নিউজ এজেন্সি এবং এএনএফ এই ঘোষণা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, পিকেকে নিজেদের সশস্ত্র কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করছে এবং সংগঠন বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গত রবিবার গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, তারা স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে তুরস্ক-পিকেকে সংঘাতের ৪০ বছরের রক্তাক্ত অধ্যায়ের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিকেকের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান দলের বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের প্রতি দল বিলুপ্তির আহ্বান জানান। কারাগার থেকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, “রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই।”

৭৬ বছর বয়সী ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কের মর্মর সাগরের একটি দ্বীপে নির্জন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দল বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তার জামিনে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি, যাদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে পিকেকে ১৯৮৪ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। যদিও পরবর্তীতে তারা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির বদলে কুর্দিদের অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের দিকে মনোযোগ দেয়।

তাদের এই বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। তুরস্কসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র পিকেকে-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি বাহিনীর টানা অভিযানে এবং ইরাক ও সিরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতায় পিকেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। এরই মধ্যে দলটির এ ধরনের সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষকরা একটি যুগান্তকারী মোড় হিসেবে দেখছেন, যা তুরস্ক এবং কুর্দিদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।