ঢাকা ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
উত্তরা ট্র্যাজেডি: বিমান বিধ্বস্তে ২৫ শিশুসহ ২৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতীয় আগরবাতি আমদানি ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন তৌকির, লড়েছেন শেষ পর্যন্ত উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত: হতাহতের খবর এখনও মেলেনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন: অভিবাসন বিষয়ক বৈঠক হবে বিশেষ গুরুত্বের সাথে ফার্মগেট স্টেশনে মেট্রোরেল আটকে যাওয়ার পর ফের চালু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় ইবি প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন, তদন্তে শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস ইকুয়েডরে ভয়াবহ সংঘর্ষ: পিকআপ ট্রাক ও এসইউভিতে নিহত ৯ ৪৮তম বিশেষ বিসিএস: ৫২০৬ জন উত্তীর্ণ ইসরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত ৬৭ ফিলিস্তিনি: ত্রাণ নিতে আসার সময় ঘটে এ ঘটনা

অবশেষে সমাপ্তি ঘটলো পিকেকের ৪০ বছরের সশস্ত্র লড়াইয়ের

তুরস্ক, পিকেক, সশস্ত্রলড়াই
  • আপডেট সময় ১১:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • / 16

ছবি সংগৃহীত

 

চার দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়া কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) অবশেষে দল বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে। অস্ত্র পরিত্যাগ করে সংগঠনটি জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ সম্পন্ন করেছে, এখন থেকে কুর্দিদের অধিকার আদায়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিই হবে প্রধান পথ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা ফিরাত নিউজ এজেন্সি এবং এএনএফ এই ঘোষণা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, পিকেকে নিজেদের সশস্ত্র কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করছে এবং সংগঠন বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গত রবিবার গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, তারা স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে তুরস্ক-পিকেকে সংঘাতের ৪০ বছরের রক্তাক্ত অধ্যায়ের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিকেকের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান দলের বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের প্রতি দল বিলুপ্তির আহ্বান জানান। কারাগার থেকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, “রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই।”

৭৬ বছর বয়সী ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কের মর্মর সাগরের একটি দ্বীপে নির্জন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দল বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তার জামিনে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি, যাদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে পিকেকে ১৯৮৪ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। যদিও পরবর্তীতে তারা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির বদলে কুর্দিদের অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের দিকে মনোযোগ দেয়।

তাদের এই বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। তুরস্কসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র পিকেকে-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি বাহিনীর টানা অভিযানে এবং ইরাক ও সিরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতায় পিকেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। এরই মধ্যে দলটির এ ধরনের সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষকরা একটি যুগান্তকারী মোড় হিসেবে দেখছেন, যা তুরস্ক এবং কুর্দিদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

অবশেষে সমাপ্তি ঘটলো পিকেকের ৪০ বছরের সশস্ত্র লড়াইয়ের

আপডেট সময় ১১:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

 

চার দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়া কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) অবশেষে দল বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে। অস্ত্র পরিত্যাগ করে সংগঠনটি জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ সম্পন্ন করেছে, এখন থেকে কুর্দিদের অধিকার আদায়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিই হবে প্রধান পথ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা ফিরাত নিউজ এজেন্সি এবং এএনএফ এই ঘোষণা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, পিকেকে নিজেদের সশস্ত্র কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করছে এবং সংগঠন বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গত রবিবার গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, তারা স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে তুরস্ক-পিকেকে সংঘাতের ৪০ বছরের রক্তাক্ত অধ্যায়ের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিকেকের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান দলের বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের প্রতি দল বিলুপ্তির আহ্বান জানান। কারাগার থেকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, “রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই।”

৭৬ বছর বয়সী ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কের মর্মর সাগরের একটি দ্বীপে নির্জন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দল বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তার জামিনে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি, যাদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে পিকেকে ১৯৮৪ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। যদিও পরবর্তীতে তারা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির বদলে কুর্দিদের অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের দিকে মনোযোগ দেয়।

তাদের এই বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। তুরস্কসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র পিকেকে-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি বাহিনীর টানা অভিযানে এবং ইরাক ও সিরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতায় পিকেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। এরই মধ্যে দলটির এ ধরনের সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষকরা একটি যুগান্তকারী মোড় হিসেবে দেখছেন, যা তুরস্ক এবং কুর্দিদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।