ঢাকা ১২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এআই চ্যাটবট নিয়ে গুরুতর তথ্য ফাঁস স্বীকার করল মেটা নবীগঞ্জে ৩০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক সংগ্রাম-শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ৮১ বছরে খালেদা জিয়া রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ড্রোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলছে লিথুয়ানিয়া এআই–ভিত্তিক হার্ডওয়্যারে বড় উদ্যোগ নিচ্ছে অ্যাপল জেরুজালেমকে চিরতরে ছিনিয়ে নিতে ই-ওয়ান বসতি প্রকল্প পুনরুজ্জীবনের ঘোষণা ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলল ইউরোপ সিরিয়ার পুনর্গঠনে ইদলিব হবে কেন্দ্রবিন্দু: প্রেসিডেন্ট শারআ নির্বাচন করলে তফসিলের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেব: আসিফ মাহমুদ রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে: সালাহউদ্দিন

যমুনার আগ্রাসনে আতঙ্কে পাবনাবাসী, নদীগর্ভে যাওয়ার শঙ্কায় শতাধিক পরিবার ও স্থাপনা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:২৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / 79

ছবি সংগৃহীত

 

যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার নেওলাইপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। সাত-আট মাস আগেও যমুনা ছিল এক কিলোমিটার দূরে। এখন নদীর খরস্রোতা ঢেউ এসে পৌঁছেছে ঘরবাড়ি ও দোকানের সামনে।

নেওলাইপাড়ার মুদিদোকানি মঈনউদ্দিন আতঙ্কিত কণ্ঠে বলেন, ‘এক সময় নদী ছিল অনেক দূরে। এখন আমার বাড়ি ও দোকানের একেবারে ঘাড়ে এসে পড়েছে। পাউবো একটু-একটু করে বস্তা ফেলতেছে, কিন্তু ভাঙন থামতেছে না। এই অবস্থায় আমার দোকান দুই-তিন দিনও টিকবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না।’

এই গ্রামে তাঁর মতোই বহু পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। নেওলাইপাড়া, মরিচাপাড়া ও নতুন বাটিয়াখড়া গ্রামের বহু ঘরবাড়ি, মসজিদ, কবরস্থান, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন হুমকির মুখে। বর্ষা মৌসুম এখনো আসেনি, অথচ আগেভাগেই নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বছর থেকেই যমুনার তীরে ভাঙন শুরু হয়েছিল। তবে গত এক মাসে তা মারাত্মক রূপ নেয়। শুধু নেওলাইপাড়া ও নতুন বাটিয়াখড়া এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার জায়গা তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ে। মাছখালী, রাকশা ও মরিচাপাড়াও বাদ যায়নি। গত দুই-তিন মাসেই অন্তত ৫০০ বিঘা কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

পাউবোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, দুই সপ্তাহ ধরে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর। মাঝেমধ্যে এক-দুদিন কাজ করেই দীর্ঘ বিরতি নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই নেওলাইপাড়ার ১৫ বিঘার বেশি জমি নদীতে চলে গেছে।

মরিচাপাড়া গ্রামের আজিমউদ্দিন, ইদ্রিস আলী ও নেওলাইপাড়ার ইশতিয়াক হোসেন বলেন, ‘আমরা বহুবার মানববন্ধন করেছি, দোয়া মাহফিল করেছি, বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখন ঘরবাড়ি ও কবরস্থান পর্যন্ত নদীর গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা।’

পাউবোর বেড়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নেওলাইপাড়ায় কাজ শুরু হয়েছে। শুরুতে জিও ব্যাগ পেতে কিছু সমস্যা ছিল এবং ঠিকাদার নিয়েও জটিলতা হয়েছিল। এখন সব সমস্যা কেটে গেছে, দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।’

নদীভাঙনের এই দুর্যোগ শুধু বসতবাড়ি নয়, গ্রামের সার্বিক স্থিতিশীলতা এবং মানুষের মানসিক শান্তিকেও গ্রাস করে নিচ্ছে এই বাস্তবতায় দ্রুত, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

যমুনার আগ্রাসনে আতঙ্কে পাবনাবাসী, নদীগর্ভে যাওয়ার শঙ্কায় শতাধিক পরিবার ও স্থাপনা

আপডেট সময় ০৫:২৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

 

যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার নেওলাইপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। সাত-আট মাস আগেও যমুনা ছিল এক কিলোমিটার দূরে। এখন নদীর খরস্রোতা ঢেউ এসে পৌঁছেছে ঘরবাড়ি ও দোকানের সামনে।

নেওলাইপাড়ার মুদিদোকানি মঈনউদ্দিন আতঙ্কিত কণ্ঠে বলেন, ‘এক সময় নদী ছিল অনেক দূরে। এখন আমার বাড়ি ও দোকানের একেবারে ঘাড়ে এসে পড়েছে। পাউবো একটু-একটু করে বস্তা ফেলতেছে, কিন্তু ভাঙন থামতেছে না। এই অবস্থায় আমার দোকান দুই-তিন দিনও টিকবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না।’

এই গ্রামে তাঁর মতোই বহু পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। নেওলাইপাড়া, মরিচাপাড়া ও নতুন বাটিয়াখড়া গ্রামের বহু ঘরবাড়ি, মসজিদ, কবরস্থান, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন হুমকির মুখে। বর্ষা মৌসুম এখনো আসেনি, অথচ আগেভাগেই নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বছর থেকেই যমুনার তীরে ভাঙন শুরু হয়েছিল। তবে গত এক মাসে তা মারাত্মক রূপ নেয়। শুধু নেওলাইপাড়া ও নতুন বাটিয়াখড়া এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার জায়গা তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ে। মাছখালী, রাকশা ও মরিচাপাড়াও বাদ যায়নি। গত দুই-তিন মাসেই অন্তত ৫০০ বিঘা কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

পাউবোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, দুই সপ্তাহ ধরে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর। মাঝেমধ্যে এক-দুদিন কাজ করেই দীর্ঘ বিরতি নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই নেওলাইপাড়ার ১৫ বিঘার বেশি জমি নদীতে চলে গেছে।

মরিচাপাড়া গ্রামের আজিমউদ্দিন, ইদ্রিস আলী ও নেওলাইপাড়ার ইশতিয়াক হোসেন বলেন, ‘আমরা বহুবার মানববন্ধন করেছি, দোয়া মাহফিল করেছি, বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখন ঘরবাড়ি ও কবরস্থান পর্যন্ত নদীর গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা।’

পাউবোর বেড়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নেওলাইপাড়ায় কাজ শুরু হয়েছে। শুরুতে জিও ব্যাগ পেতে কিছু সমস্যা ছিল এবং ঠিকাদার নিয়েও জটিলতা হয়েছিল। এখন সব সমস্যা কেটে গেছে, দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।’

নদীভাঙনের এই দুর্যোগ শুধু বসতবাড়ি নয়, গ্রামের সার্বিক স্থিতিশীলতা এবং মানুষের মানসিক শান্তিকেও গ্রাস করে নিচ্ছে এই বাস্তবতায় দ্রুত, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।