শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে বিপাকে রপ্তানি ও উদ্যোক্তারা
- আপডেট সময় ০৬:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
- / 53
শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের উদ্যোক্তারা। তাদের আশঙ্কা, এতে উৎপাদন খরচ যেমন ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে, তেমনি রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতা হারিয়ে ফেলতে পারে বাংলাদেশ। পাশাপাশি নতুন ও পুরনো গ্যাস সংযোগে ভিন্ন ভিন্ন দাম নির্ধারণ করায় দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেও সৃষ্টি হবে অসাম্য ও অরাজকতা।
এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এক লাফে গ্যাসের দাম ১৫০ থেকে ১৮০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয় শিল্পখাতে। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করলেও সেই অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “আমরা গ্যাসের অতিরিক্ত মূল্য দিচ্ছি, কিন্তু ঠিকভাবে গ্যাস পাচ্ছি না। এতে খরচ বেড়েছে দুইভাবে গ্যাসের উচ্চমূল্য এবং সরবরাহ ঘাটতির কারণে।”
সাম্প্রতিক সময়ে, ১৩ এপ্রিল আবারও নতুন সংযোগপ্রাপ্ত শিল্পকারখানার জন্য গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। আর পুরনো সংযোগের ক্ষেত্রে অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহারে বাড়তি খরচ দিতে হচ্ছে।
ফতুল্লা অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে শামীম এহসান বলেন, “নতুন উদ্যোক্তারা এতে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। ৩৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি উৎপাদনে পড়বে, যা ৩-৫ শতাংশ খরচ বাড়িয়ে দেবে।”
এতে দেশের প্রধান রপ্তানিমুখী খাত তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্প বিপদে পড়বে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একেকটি কারখানায় একেক রকম গ্যাসের দাম নির্ধারণ করায় বাজার দখলের লড়াইয়ে তৈরি হবে অসংগতি।
বিটিএমএর সহসভাপতি সালেউদ জামান খান জানান, “এই মুহূর্তে বিশ্ববাজারে গ্যাস ও জ্বালানির দাম নিম্নমুখী। কিন্তু আমরা উল্টো দাম বাড়ালাম। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে, নতুন ফ্যাক্টরি স্থাপন হবে না।”
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে না পারলে শিল্পবান্ধব জ্বালানি নীতি সম্ভব নয়। ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বলেন, “উৎপাদন ব্যয় বাড়ানো মানে রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা হারানো। বিইআরসিতে দুর্নীতি থেকে মুক্ত না হলে শিল্পে সঙ্কট আরও বাড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে হবে। না হলে ঘাটতি ও লোডশেডিং বেড়েই চলবে।”
দেশের শিল্পখাত যখন বহুমুখী চাপে, তখন প্রয়োজন কার্যকর নীতি ও বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত এমনটাই মত সংশ্লিষ্টদের।
























