নতুন নিরাপদ রিকশার নকশা করেছে বুয়েট, চলবে ঢাকা সিটিতে

- আপডেট সময় ১১:৪৮:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের একটি গবেষক দল নতুন একটি রিকশার নকশা তৈরি করেছে। তারা বলছে, এই নকশার রিকশা হবে প্রচলিত রিকশার তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ। তবে এর নির্মাণ ব্যয় হবে ব্যাটারিচালিত রিকশার সমান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জানিয়েছে, তারা এই নতুন ধরনের রিকশা ঢাকার রাস্তায় চলাচলের অনুমতি দেবে এবং ধীরে ধীরে পুরোনো রিকশাগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।
নতুন এই রিকশার নকশা করেছেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. এহসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল। অধ্যাপক এহসান জানান, ২০২২ সাল থেকে তিনি নিরাপদ রিকশার নকশা নিয়ে কাজ করছেন এবং এ নিয়ে সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন, তবে সে উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি।
ঢাকায় বর্তমানে প্যাডেলচালিত ও ব্যাটারিচালিত দুই ধরনের রিকশা চলাচল করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেড়ে গেছে, যা নিবন্ধনবিহীন এবং চালকদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। এদের গতি বেশি হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল, যা বড় ঝুঁকি তৈরি করছে।
বুয়েটের নকশা করা রিকশায় থাকছে ১৬টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। গবেষণা দল জানায়, দেশে প্রচলিত ১২ ধরনের ব্যাটারিচালিত রিকশার নিরাপত্তা ত্রুটি চিহ্নিত করে নতুন নকশায় তা সংশোধন করা হয়েছে।
এই দলে আরও ছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক এ সালাম আকন্দ, মো. আমান উদ্দীন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান খান এবং গবেষণা প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান ও আবদুল আজিজ ভুঁইয়া।
নতুন রিকশার দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ২ মিটার, প্রস্থ দেড় মিটার এবং উচ্চতা ২ দশমিক ১ মিটার। ওজন বহন করতে পারবে ৩২৫ থেকে ৪২৫ কেজি পর্যন্ত। ফলে চালক দুই যাত্রী নিয়ে সহজেই এটি চালাতে পারবেন।
এই রিকশায় উন্নত ব্রেকিং ব্যবস্থা থাকবে। তিনটি চাকায় থাকবে হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক এবং পার্কিং ব্রেক। ফলে রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
এছাড়া নতুন রিকশায় থাকবে লুকিং গ্লাস ও ইন্ডিকেটর। চালককে আর পেছনে ফিরে দেখতে হবে না এবং মোড় নেয়ার সময় পেছনের যানবাহন বুঝতে পারবে।
রিকশায় থাকবে ছাউনি ও কাচের উইন্ডশিল্ড। বৃষ্টিতে চালক ও যাত্রী ভিজবেন না। এতে হেডলাইট যুক্ত করা হয়েছে, যাতে হাই বিম, লো বিম ও ডে টাইম রানিং ল্যাম্প থাকবে।
বিভাটেক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, এই রিকশার ব্যাটারির খরচ হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং মোট খরচ হবে দেড় লাখ টাকার মধ্যে।
তিনি আরও জানান, একবার চার্জ দিলে রিকশাটি ১২০ কিলোমিটার চলতে পারবে এবং দেড় বছর পর ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হবে। পুরোনো ব্যাটারি রিসাইকেল করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যাডেলচালিত রিকশা সাধারণত ঘণ্টায় ১০-১২ কিলোমিটার গতি তুলতে পারে। কিন্তু তাতে মোটর বসিয়ে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি তোলা হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
অধ্যাপক এহসান বলেন, প্যাডেলচালিত রিকশার কাঠামো ৩০ কিলোমিটার গতির উপযোগী নয় এবং এর ব্রেক ব্যবস্থা ১০ কিলোমিটার গতির বেশি সামলাতে পারে না।