ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে আজ মুখোমুখি হবে মেসির ইন্টার মায়ামি ও পিএসজি হাতিয়ার কিশোরীকে নির্যাতন ও অপহরণ : চট্টগ্রামে অভিযুক্ত আটক জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকার ব্যর্থ, এনসিপি নিজেই ঘোষণা দেবে: নাহিদ ইসলাম ভারতে রথযাত্রায় মর্মান্তিক পদদলনের ঘটনায় নিহত ৩, আহত ১০ উত্তরার আজমপুরে ট্রাকচাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় পাকিস্তান কোনো আপস করবে না: সেনাপ্রধান বেনফিকাকে হারিয়ে চেলসি ও বোতাফোগোর হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পালমেইরাস ডিএসইতে আধা ঘণ্টায় লেনদেন ৮০ কোটি টাকা, পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি স্থগিত করল আপিল বিভাগ পাকিস্তানেরসেন্ট্রাল জেলে বন্দিদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় সুপারসহ ১৫ কর্মকর্তা বরখাস্ত

যমুনার অকাল ভাঙনে বিপর্যস্ত বেড়ার তিন গ্রাম, দিশেহারা হাজারো পরিবার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:৪৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 84

ছবি সংগৃহীত

 

পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা তীরবর্তী গ্রামগুলোতে অকাল ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। বর্ষা আসার আগেই গত দুই মাস ধরে শুরু হওয়া ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, মসজিদ-মাদরাসা ও কবরস্থান। সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে নেওলাইপাড়া, বাটিয়াখড়া ও মরিচাপাড়া গ্রামের প্রায় হাজারখানেক পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু তোলার কারণে স্রোতের গতিপথ বদলে গিয়ে অস্বাভাবিক ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর পেটে হারিয়ে গেছে প্রায় এক হাজার বিঘা জমি এবং পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতভিটা। নদীপাড়ে এখন প্রতিনিয়তই তৈরি হচ্ছে নতুন ফাটল, বাড়ছে আতঙ্ক।

নেওলাইপাড়ার বাসিন্দা ইমদাদুল হক বলেন, “নদী আগে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু এখন চোখের সামনে চলে এসেছে। স্রোতও অনেকটা বদলে গেছে। ফলে হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়েছে।”

গ্রামের আরও দুই বাসিন্দা সালেহা খাতুন ও মজিরন বেওয়ার অভিযোগ, “যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা আমাদের শেষ আশ্রয়টুকুও হারাবো। মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান সবই ভাঙনের হুমকিতে আছে।”

বাটিয়াখড়া গ্রামের আফতাব হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, “ড্রেজার দিয়ে যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে নদীর স্বাভাবিক গতি পাল্টে যাচ্ছে। এতে বর্ষার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা দরকার।”

স্থানীয়দের দুর্দশা কিছুটা লাঘব করতে সম্প্রতি ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, “ভাঙন পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রকল্প অনুমোদনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে ভাঙনরোধে কার্যক্রম শুরু করব।”

অন্যদিকে, স্থানীয়দের দাবির মুখে প্রশাসনের দৃষ্টি আরও জোরালোভাবে আকর্ষণের চেষ্টা চলছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা নদীশাসন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হলে হয়তো তারা আবার একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবেন।

যমুনা ভাঙনের ভয়াবহতা ঠেকাতে এখনই প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ নয়তো হারিয়ে যাবে আরও অনেক ঘর, অনেক জীবনের ঠিকানা।

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

যমুনার অকাল ভাঙনে বিপর্যস্ত বেড়ার তিন গ্রাম, দিশেহারা হাজারো পরিবার

আপডেট সময় ০১:৪৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

 

পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা তীরবর্তী গ্রামগুলোতে অকাল ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। বর্ষা আসার আগেই গত দুই মাস ধরে শুরু হওয়া ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, মসজিদ-মাদরাসা ও কবরস্থান। সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে নেওলাইপাড়া, বাটিয়াখড়া ও মরিচাপাড়া গ্রামের প্রায় হাজারখানেক পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু তোলার কারণে স্রোতের গতিপথ বদলে গিয়ে অস্বাভাবিক ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর পেটে হারিয়ে গেছে প্রায় এক হাজার বিঘা জমি এবং পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতভিটা। নদীপাড়ে এখন প্রতিনিয়তই তৈরি হচ্ছে নতুন ফাটল, বাড়ছে আতঙ্ক।

নেওলাইপাড়ার বাসিন্দা ইমদাদুল হক বলেন, “নদী আগে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু এখন চোখের সামনে চলে এসেছে। স্রোতও অনেকটা বদলে গেছে। ফলে হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়েছে।”

গ্রামের আরও দুই বাসিন্দা সালেহা খাতুন ও মজিরন বেওয়ার অভিযোগ, “যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা আমাদের শেষ আশ্রয়টুকুও হারাবো। মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান সবই ভাঙনের হুমকিতে আছে।”

বাটিয়াখড়া গ্রামের আফতাব হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, “ড্রেজার দিয়ে যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে নদীর স্বাভাবিক গতি পাল্টে যাচ্ছে। এতে বর্ষার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা দরকার।”

স্থানীয়দের দুর্দশা কিছুটা লাঘব করতে সম্প্রতি ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, “ভাঙন পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রকল্প অনুমোদনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে ভাঙনরোধে কার্যক্রম শুরু করব।”

অন্যদিকে, স্থানীয়দের দাবির মুখে প্রশাসনের দৃষ্টি আরও জোরালোভাবে আকর্ষণের চেষ্টা চলছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা নদীশাসন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হলে হয়তো তারা আবার একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবেন।

যমুনা ভাঙনের ভয়াবহতা ঠেকাতে এখনই প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ নয়তো হারিয়ে যাবে আরও অনেক ঘর, অনেক জীবনের ঠিকানা।