রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এশিয়ার নেতাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা
আঞ্চলিক সংকট সমাধান ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় এশিয়ান নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) চীনের বোয়াও ফোরামে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ১.২ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে, যারা মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই সংকট এখন শুধু একটি দেশের সমস্যা নয়, বরং এটি পুরো এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে এশীয় নেতাদের একজোট হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, বিশ্বজুড়ে নিন্দা সত্ত্বেও সেখানে গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। এটি শুধুমাত্র আরব বা মুসলিম জনগণের উদ্বেগের বিষয় নয়, এটি একটি গভীর মানবিক সংকট। একইভাবে ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে, যার প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, ঋণের ভার, এবং মানবিক সংকটগুলো আজ বিশ্বজুড়ে একযোগে আঘাত হানছে। এই বাস্তবতায় এশিয়াকে আরও শক্তিশালী, সংহত ও সহনশীল অঞ্চলে রূপান্তরের জন্য ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ প্রয়োজন।
অর্থনৈতিক প্রসারে ড. ইউনূস বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল অর্থায়নের মাধ্যমে এশিয়াকে আরও বৈচিত্র্যময় অর্থনীতিতে রূপান্তর করা জরুরি। খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা করে এশীয় সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এশিয়ার তরুণ প্রজন্ম বিশাল সম্ভাবনার উৎস। এই কর্মশক্তিকে কাজে লাগাতে হলে তাদের জন্য উদ্যোক্তা উদ্যোগ, টেকসই উন্নয়ন ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাই এশিয়ার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি।