অমর একুশে ও বইমেলা: ভাষা আন্দোলনের চেতনা
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, বাঙালির ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে, ১৯৫২ সালে, মাতৃভাষার অধিকারের জন্য অনেক বাঙালি ছাত্র তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভাষা আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়। বইমেলায় ভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত বইয়ের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ থাকে, যা ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে প্রজ্বলিত রাখে।
এই বছর, আগামী প্রকাশনী ভাষা আন্দোলনের উপর তিনটি নতুন বই প্রকাশ করেছে: এম আবদুল আলীমের “ভাষা আন্দোলনে মওলানা ভাসানী”, “ভাষা আন্দোলনে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী” এবং আবদুন নূরের “রক্তস্নাত একুশে”। এছাড়াও, হুমায়ুন আজাদের “বাঙলা ভাষা” (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড), “বাঙলা ভাষার শত্রুমিত্র”, এবং “ভাষা-আন্দোলন: সাহিত্যিক পটভূমি” সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই পাওয়া যাবে।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে লেখালেখির জন্য পরিচিত ইতিহাসবিদ বদরুদ্দীন উমরের বই “আমাদের ভাষার লড়াই” শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা হয়েছে। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার “প্রাণের মিনার শহীদ মিনার” এবং ড. এম আবদুল আলীমের “ভাষা আন্দোলনে কংগ্রেস” বইগুলোও মেলায় পাওয়া যাবে। এছাড়া, ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদ আবুল বরকতের জীবনী “ভাষাশহিদ আবুল বরকত: নেপথ্যকথা” প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী।
মেলায় ভাষা আন্দোলনের উপর আরও কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে, যেমন আহমদ রফিকের “একুশ থেকে একাত্তর” এবং “ফিরে দেখা অমর একুশ ও অন্যান্য ভাবনা”। গোলাম কুদ্দুছের “ভাষার লড়াই, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন” এবং “বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলন” বইগুলোও উল্লেখযোগ্য।
আজকের বইমেলায় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হবে। এই দিনটি আমাদের জাতিসত্তা ও ভাষাভিত্তিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হিসেবে বিবেচিত হয়। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে, যা আমাদের ইতিহাসের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।