ঢাকা ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতীয় আগরবাতি আমদানি ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন তৌকির, লড়েছেন শেষ পর্যন্ত উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত: হতাহতের খবর এখনও মেলেনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন: অভিবাসন বিষয়ক বৈঠক হবে বিশেষ গুরুত্বের সাথে ফার্মগেট স্টেশনে মেট্রোরেল আটকে যাওয়ার পর ফের চালু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় ইবি প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন, তদন্তে শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস ইকুয়েডরে ভয়াবহ সংঘর্ষ: পিকআপ ট্রাক ও এসইউভিতে নিহত ৯ ৪৮তম বিশেষ বিসিএস: ৫২০৬ জন উত্তীর্ণ ইসরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত ৬৭ ফিলিস্তিনি: ত্রাণ নিতে আসার সময় ঘটে এ ঘটনা গাজীপুরে নাসির হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য গ্রেপ্তার

পার্বত্য আদিবাসীদের প্রধান ‘বিজু’ উৎসব তিন দিন ব্যাপি আজ থেকে শুরু

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:৫৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • / 125

ছবি সংগৃহীত

 

 

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বসবাসরত আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব হলো বিঝু। প্রতি বছর এই উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে এক অন্যরকম আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।

বিঝু উৎসব সাধারণত বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের প্রথম দিন, অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির শেষ দুই দিন ও পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এই উৎসবে পাহাড়জুড়ে চলে নানা আয়োজন। আদিবাসীরা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও, তাদের উৎসব, বিয়ে, নতুন বাড়ি নির্মাণ কিংবা জুম চাষের ফসল তোলার মতো বিশেষ অনুষ্ঠানে এখনো আদিধর্ম ‘প্রতি পূজার’ কিছু রীতি পালন করে আসছে।

বিঝু উৎসবের তিনটি দিন:

ফুল বিঝু: এটি বিঝুর প্রথম দিন। এদিন পার্বত্যবাসীরা তাদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে ফুল ও লতাপাতা দিয়ে সাজায়। শিশু-কিশোররা ভোরে পাহাড়ি নদী বা ছড়ায় স্নান করে। এরপর সূর্যোদয়ের সময় পানির দেবতার উদ্দেশ্যে কলাপাতায় বিভিন্ন নৈবেদ্য সাজিয়ে পূজা দেওয়া হয়। বৌদ্ধ মন্দিরেও পূজা-অর্চনা করা হয়। ছোট ছেলেমেয়েরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বড়দের আশীর্বাদ নেয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নতুন গেরুয়া কাপড় দেওয়া হয় এবং গৃহপালিত পশু-পাখিদের স্নান করানো হয়।

মূল বিঝু: এটি বিঝুর দ্বিতীয় দিন। এদিন সবাই নতুন পোশাক পরে এবং দল বেঁধে বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে পাহাড়ি খাবার, পিঠা খায়।
বিঝু উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হলো ‘পাজন’ নামক বিশেষ সবজি। এতে ৩৬ রকমের পদ থাকে, তবে কমপক্ষে ২০টি পদ থাকতেই হয়।
পাজনে বুনো আলু, শুটকি, চিংড়ি, কাঁঠাল, বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং ‘সিদোল’ নামক শুটকি মাছের পেস্ট ব্যবহার করা হয়। যে বাড়িতে সবচেয়ে বেশি পদের পাজন রান্না করা হয়, বিঝুর সময় সেই বাড়ির সুনাম ছড়িয়ে পরে। গজ্যাপজ্যা:(নুও বজর) এটি বিঝুর তৃতীয় দিন।
এই দিনে সকাল সকাল সকল প্রাণী মঙ্গল এর জন্য এবং পারিবারিক এবং সামাজিক ও পৃথিবী হিতসূখ মঙ্গলের উদ্দেশ্য নিয়ে ধর্মীয় গুরু ভান্তের নিকট প্রার্থনা করা হয়। এই দিনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে। এই দিনে তারা একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেয়।

বিঝু উৎসবের তাৎপর্য:

বর্ষবিদায় ও নববর্ষ বরণ: এই উৎসবের মাধ্যমে পুরনো বছরের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ঐক্য ও সম্প্রীতি: এই উৎসব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে। সংস্কৃতির প্রতিফলন: এই উৎসবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও রীতিনীতি তুলে ধরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পার্বত্য আদিবাসীদের প্রধান ‘বিজু’ উৎসব তিন দিন ব্যাপি আজ থেকে শুরু

আপডেট সময় ০৯:৫৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

 

 

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বসবাসরত আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব হলো বিঝু। প্রতি বছর এই উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে এক অন্যরকম আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।

বিঝু উৎসব সাধারণত বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের প্রথম দিন, অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির শেষ দুই দিন ও পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এই উৎসবে পাহাড়জুড়ে চলে নানা আয়োজন। আদিবাসীরা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও, তাদের উৎসব, বিয়ে, নতুন বাড়ি নির্মাণ কিংবা জুম চাষের ফসল তোলার মতো বিশেষ অনুষ্ঠানে এখনো আদিধর্ম ‘প্রতি পূজার’ কিছু রীতি পালন করে আসছে।

বিঝু উৎসবের তিনটি দিন:

ফুল বিঝু: এটি বিঝুর প্রথম দিন। এদিন পার্বত্যবাসীরা তাদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে ফুল ও লতাপাতা দিয়ে সাজায়। শিশু-কিশোররা ভোরে পাহাড়ি নদী বা ছড়ায় স্নান করে। এরপর সূর্যোদয়ের সময় পানির দেবতার উদ্দেশ্যে কলাপাতায় বিভিন্ন নৈবেদ্য সাজিয়ে পূজা দেওয়া হয়। বৌদ্ধ মন্দিরেও পূজা-অর্চনা করা হয়। ছোট ছেলেমেয়েরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বড়দের আশীর্বাদ নেয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নতুন গেরুয়া কাপড় দেওয়া হয় এবং গৃহপালিত পশু-পাখিদের স্নান করানো হয়।

মূল বিঝু: এটি বিঝুর দ্বিতীয় দিন। এদিন সবাই নতুন পোশাক পরে এবং দল বেঁধে বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে পাহাড়ি খাবার, পিঠা খায়।
বিঝু উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হলো ‘পাজন’ নামক বিশেষ সবজি। এতে ৩৬ রকমের পদ থাকে, তবে কমপক্ষে ২০টি পদ থাকতেই হয়।
পাজনে বুনো আলু, শুটকি, চিংড়ি, কাঁঠাল, বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং ‘সিদোল’ নামক শুটকি মাছের পেস্ট ব্যবহার করা হয়। যে বাড়িতে সবচেয়ে বেশি পদের পাজন রান্না করা হয়, বিঝুর সময় সেই বাড়ির সুনাম ছড়িয়ে পরে। গজ্যাপজ্যা:(নুও বজর) এটি বিঝুর তৃতীয় দিন।
এই দিনে সকাল সকাল সকল প্রাণী মঙ্গল এর জন্য এবং পারিবারিক এবং সামাজিক ও পৃথিবী হিতসূখ মঙ্গলের উদ্দেশ্য নিয়ে ধর্মীয় গুরু ভান্তের নিকট প্রার্থনা করা হয়। এই দিনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে। এই দিনে তারা একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেয়।

বিঝু উৎসবের তাৎপর্য:

বর্ষবিদায় ও নববর্ষ বরণ: এই উৎসবের মাধ্যমে পুরনো বছরের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ঐক্য ও সম্প্রীতি: এই উৎসব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে। সংস্কৃতির প্রতিফলন: এই উৎসবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও রীতিনীতি তুলে ধরে।